দেশের প্রায় সব অঞ্চলেই সার সংকটে বিপাকে পড়ছেন কৃষক। সরকারের কাছে যা মজুত আছে, তা চাহিদার তুলনায় কম। তবে ভিন্ন কথা বলছেন কষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, সরবরাহ ব্যবস্থায় ত্রুটি থাকলেও তেমন সংকট নেই বলে জানান তারা। অন্তবর্তী সরকারকে বিব্রত করতে বিশেষ সিন্ডিকেট সার নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি করছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দেশের উত্তরাঞ্চল বেশিরভাগ জমিতে চাষ হচ্ছে আলু। সামনে বোরো মৌসুম। কিন্তু সার সংকটে স্বস্তিতে নেই কৃষক।
ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত দেশে সারের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। নওগাঁর কৃষকদের অভিযোগ, সরবরাহ কমার অজুহাতে সব ধরনের সারে বস্তাপ্রতি আড়াইশ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়েছে ব্যবসায়ী ও ডিলাররা। এতে বেড়েছে খরচ। আবার বেশি টাকা দিয়েও সময়মতো মিলছে না সার। একই চিত্র রাজশাহীসহ অনেক জেলায়।
রাজশাহীর এক কৃষক বলেন, ‘এক দোকানে চাচ্ছে সাড়ে ১ হাজার ৪০০ টাকা। আরেক দোকানে ১ হাজার ৫৩০ টাকা বস্তা। একই জিনিস, দাম ভিন্ন। সার পাচ্ছিই না সার দেবো কিভাবে?’
আমদানির জন্য মূল্য পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় বেশ কয়েকটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান সার সরবরাহ করেনি বলে অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজোশে সুযোগ নিচ্ছে সিন্ডিকেট। যার দোষ পড়ছে ডিলার ও অন্যান্য ব্যবসায়ীদের ঘাড়ে।
ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এখানে সিন্ডিকেশন থাকতে পারে অথবা অন্যান্য কারসাজি থাকতে পারে। সাপ্লাই চেইনকে অন্যভাবে তদারকি করার প্রয়োজন আছে। এখানে কঠোর আইনের প্রয়োগেরও প্রয়োজন হতে পারে। কেউ যদি সিন্ডিকেশন করে বিশেষ ক্ষমতা আইন আছে, ভোক্তা অধিকার আইন আছে। এগুলো প্রয়োগ করে কৃষকের কাছে সার পৌঁছে দিতে হবে এবং সেটা সঠিক মূল্যে। শুধু পৌঁছালেই হবে না সারের মূল্যটাও যেন যথাযথ থাকে।’
তবে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, কিছু এলাকায় সমস্যা হলেও সামগ্রিকভাবে সারের ঘাটতি নেই। সিন্ডিকেটের কারসাজি রোধে কাজ চলছে।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম বলেন, ‘অদৃশ্য সিন্ডিকেট কাজ করছে এটা আসলে চিহ্নিত করা একটু কঠিন। তবে মনিটরিং আমরা জোরদার করতে পারি। কৃষকের হাতে যদি আমরা সারটা পৌঁছে দিতে পারি আসলেই যারা কৃষিকাজটা করে, এবং এটা আমরা উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি।’
দেশে রাসায়নিক সারের ৭০ শতাংশেরও বেশি ব্যবহৃত হয় বোরো ও রবি মৌসুমে। সময়মতো সার না পেলে খাদ্য সংকটের শঙ্কা থাকবে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
মানবকণ্ঠ/আরআই
Comments