Image description

শুধু সিনেমার গল্প নয়, প্রতিটি গল্পই জীবনের, সংসার সমাজের, দেশের। বাস্তবতার নিরিখেই গল্প নির্মাণ হয়। তবে এ গল্প ফুটে তোলার জন্য দরকার ভালো অভিনেতা-অভিনেত্রী। গল্পকার ও নির্মাতার চেষ্টা থাকলেও অভিনয় শিল্পী না চাইলে ভালো কিছু নির্মাণ হয় না। এমন একজন অভিনয় শিল্পী পরীমণি। তিনি ঢাকাই সিনেমার লাস্যময়ী নায়িকা। 

পরীমণি বড় পর্দার পাশাপাশি ওটিটিতেও কাজ করছেন- ‘রঙিলা কিতাব’ নামে ওয়েব সিরিজের শুটিং শেষ করেছেন। এতে পরীকে সন্তান-সম্ভবা মায়ের চরিত্রে দেখা যাবে। পরীর চরিত্র মানে বাস্তবতার চিত্র। তার অভিনয়কে অভিনয় বলা যায় না, বাস্তব চরিত্রই ফুটে তোলার চেষ্টা করেন। এবার পরীকে নতুনরূপে দেখতে পাবে দর্শক। 

কিঙ্কর আহসানের লেখা ‘রঙিলা কিতাব’ উপন্যাস অবলম্বনে একই নামে ওয়েব সিরিজ বানিয়েছেন অনম বিশ্বাস। সিরিজের গল্প বরিশালের এক গ্যাংস্টারকে নিয়ে। বাবা হচ্ছে, এটা জানার পর সেই গ্যাংস্টার অপরাধ জগত ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। স্ত্রী সুপ্তিকে নিয়ে শান্তির খোঁজে বেরিয়ে পড়ে প্রদীপ। কিন্তু পথে অপেক্ষা করছিল এক অজানা বিপদ। একজন সংসদ সদস্যের হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে যায় সে। যতই নিজেকে ছাড়াতে চায়, ততই যেন জড়িয়ে যায় ঘটনার সঙ্গে। 

শেষ পর্যন্ত প্রদীপ ও সুপ্তির ভাগ্যে কী আছে, সেটা জানতে দর্শক অপেক্ষা করছেন বেশ কিছুদিন হলো। অপেক্ষার পালা শেষে ‘রঙিলা কিতাব’র মুক্তির তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। অনম বিশ্বাস নির্মিত এ সিরিজটি মুক্তি পাচ্ছে আগামী ৮ নভেম্বর। ওইদিন ওটিটি প্লাটফর্ম হইচইয়ে মুক্তি পাবে সিরিজটি। রঙিলা কিতাবে প্রদীপ ও সুপ্তির চরিত্রে অভিনয় করেছেন পরীমণি ও মোস্তাফিজ নুর ইমরান। সিরিজের পোস্টারেও দেখা মিলেছে দুজনের। এক হাতে পিস্তল, আরেক হাতে পরীকে জড়িয়ে ধরে আছেন নুর। পরীর চোখে-মুখে ভয়, গুটিসুটি হয়ে নায়কের বুকে খুঁজছেন আশ্রয়। মানুষের অট্টালিকা থাকলেও আশ্রয় খোঁজে প্রিয় মানুষের বুকে। হৃদয় মানুষের প্রশান্তির আশ্রয়। এমন গল্প নিয়েই ‘রঙিলা কিতাব’। আর এ গল্পের চরিত্র দর্শকের জন্য পর্দায় তুলে ধরবেন পরীমণি।

‘রঙিলা কিতাব’র অফিসিয়াল পোস্টারটি ভালোবাসা, রহস্য ও উত্তেজনায় ভরপুর। কিঙ্কর আহ্সানের লেখা ‘রঙিলা কিতাব’ উপন্যাস ছায়া অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে ওয়েব সিরিজটি। এই প্রথম কোনো ওয়েব সিরিজে কাজ করেছেন পরীমণি। স্ক্রিপ্ট পড়ার পর থেকেই কাজটি নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত ছিলেন তিনি। 

পরী বলেন, “প্রতিটি প্রথম অনুভূতি, প্রথম স্মৃতি সবার জন্য সব সময় স্পেশাল। সেরকমই আমার প্রথম ওয়েব সিরিজে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল অসাধারণ। এটি সম্ভব হয়েছে ‘হইচই’র কারণে। শুটের শুরুর দিন থেকেই আমি বেশ উচ্ছ্বসিত ছিলাম। এটি আমার জন্য এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। শুটিংয়ের সময় আমার সহ-অভিনেতা ও টিমের সকল সদস্যের সাথে কাজ করতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। সবাই খুব সহযোগিতা করেছেন। এখন দর্শকদের প্রতিক্রিয়া পাওয়ার জন্য অপেক্ষায় রয়েছি।’ 

পরীমণি এমন একজন অভিনেত্রী যার অভিনয় দর্শক মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করেন। অতীতের কাজ তার বড় প্রমাণ। তিনি নিজের মেধার সবটুকু দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। 

অন্যদিকে পরীর সঙ্গে অভিনয় করবেন মোস্তাফিজ নুর ইমরান। তার প্রত্যাশাও কম নয়। ইমরান তার প্রত্যাশার কথা জানিয়ে বলেন- ‘এটা দারুণ প্রেমের গল্প। পাশাপাশি পলিটিক্যাল অ্যাটমোসফিয়ার আছে। কেন এই গল্পকে রক্তাক্ত প্রেমের গল্প বলা হচ্ছে, সিরিজটি দেখলেই দর্শক তা বুঝতে পারবেন। পোস্টার রিলিজের পর অনেকে প্রশংসা করছেন। সেই প্রশংসা শুনে ভালো লাগছে। আশা করি দর্শক নিরাশ হবেন না।’

দিন যায় আশায়, প্রত্যাশায় এবং অপেক্ষায়। একজন শিল্পীর জন্য এসব আরো কঠিন- আনন্দের। দর্শক অপেক্ষা করে শিল্পীর নতুন কাজের জন্য, শিল্পী অপেক্ষা করে দর্শকের প্রতিক্রিয়া শুনতে। অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে বহু কাক্সিক্ষত ‘রঙিলা কিতাব’ আসছে আগামী ৮ নভেম্বর। এ ওয়েব সিরিজটি ওটিটি প্লাটফর্ম হইচইয়ে মুক্তি পাবে।

অনম বিশ্বাস মেধাবী পরিচালক। তিনি নির্মাণ করেন মেধার স্বাক্ষর রেখে। তার নির্মাণ অতীতে দর্শকের মন জয় করেছে। পরিচালক অনম বিশ্বাস বলেন- ‘মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের গল্প ‘রঙিলা কিতাব’। গল্পটা এমনভাবে বলার চেষ্টা করেছি, যাতে দর্শক সহজে কানেক্ট করতে পারেন। এই সিরিজ তৈরি করতে গিয়ে আমরা শুধু বিনোদন নয়, বরং একটি বার্তা দিতে চেয়েছি।’

নির্মাতা কী বার্তা দিতে চেয়েছেন তা দেখতে বা জানতে আর কয়েকটি দিন অপেক্ষা করতে হবে। নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পীদের নিকট দর্শক যা প্রত্যাশা করেছেন- তা পূরণ হবে আশা করছি। পরীর অভিনয় আকাশে আবার সূর্য উঠুক, আলো আসুক তার স্বপ্নজুড়ে। হাতে উঠুক জয়ের মশাল। ‘রঙিলা কিতাব’ পুরো টিমের জন্য সবসময় শুভ কামনা।