সনাতন ধর্মাবলম্বী ছিলেন অভিনেতা প্রবীর মিত্র। তবে ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান হয়েছিলেন তিনি। রবিবার রাত ১০টা ১০ মিনিটের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় এই প্রবীণ শিল্পীর। বাদ জোহর দুটি জানাজার পর রাজধানীর আজিমপুর গোরস্থানে তাকে দাফন করা হবে, জানিয়েছে তার পরিবার।
প্রবীর মিত্রর পুত্রবধূ সোনিয়া ইসলাম জানিয়েছেন, রাতে গোসল শেষে ফ্রিজার গাড়িতে প্রবীর মিত্রের মরদেহ ধানমন্ডির বাসায় রাখা হবে। বাদ জোহর বিএফডিসিতে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর চ্যানেল আইতে দ্বিতীয় জানাজার পর আজিমপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
২০২৩ সালে সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রবীর মিত্র বলেন, ‘আমি তো কনভার্ট হয়েই ওর মাকে (সন্তানের দিকে ইশারা করে) বিয়ে করেছিলাম। তখন মুসলমান হয়েছিলাম।’ তবে ধর্ম নিয়ে কোনো বাড়াবাড়ি ছিল না এই অভিনেতার। তিনি বিশ্বাস করতেন, ‘সবার ওপরে মানুষ সত্য, তাহার ওপরে নাই’ নীতি। তার জীবনেও এই কবিতার প্রভাব ছিল।
প্রবীর মিত্রের স্ত্রী অজান্তা মিত্র ২০০০ সালে প্রয়াত হন। অভিনেতার তিন ছেলে ও এক মেয়ে মিথুন মিত্র, সিফাত ইসলাম, সামিউল ইসলাম ও ফেরদৌস পারভীন। ছোট ছেলে সামিউল মারা গেছেন। প্রবীর মিত্র দীর্ঘদিন রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাস করেছেন। সর্বশেষ তিনি থাকতেন ধানমন্ডিতে।
১৯৪১ সালের ১৮ আগস্ট চাঁদপুরের নতুনবাজার গুয়াখালা রোডে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন প্রবীর মিত্র। পুরান ঢাকায় বড় হওয়া প্রবীর মিত্র স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চায় যুক্ত হন। স্কুলজীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন তিনি। সেটাই ছিল তার অভিনয়জীবনের অনুপ্রেরণা।
১৯৬৯ সালে প্রয়াত এইচ আকবরের ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রথম প্রবীর মিত্র ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। যদিও চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৭১ সালের ১ জানুয়ারি। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে প্রবীর মিত্র ‘নায়ক’ হিসেবে কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। পরে চরিত্রাভিনেতা হিসেবে কাজ করেও তিনি দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছেন।
‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সেয়ানা’, ‘জালিয়াত’, ‘ফরিয়াদ’, ‘রক্ত শপথ’, ‘চরিত্রহীন’, ‘জয়–পরাজয়’, ‘অঙ্গার’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘মধুমিতা’, ‘অশান্ত ঢেউ’, ‘অলংকার’, ‘অনুরাগ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘তরুলতা’, ‘গাঁয়ের ছেলে’, ‘পুত্রবধূ’সহ চার শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
মানবকণ্ঠ/আরএইচটি
Comments