ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের দায়ের করা মারধর, ভাঙচুর ও ভয়ভীতি দেখানোর মামলায় পরী মণির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। এ সময় আবেদন নামঞ্জুর করে রোববার (২৬ জানুয়ারি) এ পরোয়ানা জারি করেন আদালত। একইসঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
এর প্রেক্ষিতে আগামীকাল (২৭ জানুয়ারি) সকালে আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ ও জামিন আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরী মণি। অভিনেত্রীর আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘আজ মামলার চার্জ শুনানি ছিল। অসুস্থ থাকায় পরী মণি আদালতে হাজির হতে পারেননি। আগামীকাল তিনি আদালতে উপস্থিত হয়ে আত্মসমর্পণ ও জামিন আবেদন করবেন।’
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ৬ জুলাই আদালতে মামলাটি করেন নাসির উদ্দিন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ঢাকা জেলার পরিদর্শক মো. মনির হোসেন ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরী মণি ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তাদের বিরুদ্ধে মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ১৮ এপ্রিল ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এম সাইফুল ইসলামের আদালত দুই আসামিকে ২৫ জুন আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন। ওইদিন আত্মসমর্পণ করে জামিন পান তারা।
এ মামলার অভিযোগে বলা হয়, পরী মণি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহলসেবী। সুযোগ বুঝে তারা বিভিন্ন দামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করেন না। পরী মণি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করে হয়রানির ভয় দেখান। পরে তারা ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন। বাদী ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম রাত সোয়া ১টার দিকে যখন ক্লাব ত্যাগ করছিলেন, তখন পরী মণি উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাদী নাসির উদ্দিনকে ডাক দেন এবং তাদের সঙ্গে কিছু সময় বসার অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনামূল্যে পার্সেল দেওয়ার জন্য বাদীকে চাপ দেন। বাদী এতে রাজি না হওয়ায় পরী মণি তাকে গালমন্দ করেন। বাদানুবাদের একপর্যায়ে পরী মণি বাদীর দিকে একটি সারভিং গ্লাস ছুড়ে মারেন এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিও ছুড়ে মারেন। এতে নাসির উদ্দিন মাথায় ও বুকে আঘাত পান।
মামলায় আরও বলা হয়, পরী মণি ও তার সহযোগীরা নাসির উদ্দিনকে মারধর ও হত্যার হুমকি দিয়েছেন ও ভাঙচুর করেছেন। এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পরী মণি সাভার থানায় বাদীসহ দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন।
এ ছাড়া ২০২১ সালের ৫ আগস্ট রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত বাসা থেকে র্যাবের এক অভিযানে পরী মণিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে বনানী থানায় দায়ের করা একটি মাদক মামলায় কারাগারে প্রেরণ করা হয় তাঁকে। দীর্ঘ ২৭ দিন পর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান তিনি।
মানবকণ্ঠ/এসআরএস
Comments