ঈদের ছুটিতে পর্যটক বরণে প্রস্তুত কুয়াকাটা, নিরাপত্তা জোরদার

ঈদুল ফিতরের দীর্ঘ নয় দিনের ছুটি যেন ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এক দারুণ সুযোগ। আর এই সুযোগকে কাজে লাগাতে প্রতি বছরের মতো এবারও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায় ভিড় জমাবেন পর্যটকেরা। তাদের বরণে ইতোমধ্যেই সেজে উঠেছে সাগরকন্যা। পর্যটকদের সেবায় নিয়োজিত ১৬টি পেশার ব্যবসায়ীরা নিয়েছেন ব্যাপক প্রস্তুতি।
দীর্ঘ ছুটিকে সামনে রেখে কুয়াকাটায় হোটেল বুকিংয়ের হিড়িক লেগেছে। প্রথম শ্রেণির হোটেলগুলোর প্রায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ এবং দ্বিতীয় শ্রেণির হোটেলগুলোর ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কক্ষ এরই মধ্যে অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। শুধু হোটেল নয়, পর্যটন সংশ্লিষ্ট সকল ব্যবসায়ীই নিজেদের প্রস্তুত করতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন।
পর্যটকদের নিরাপত্তা, সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা এবং নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে স্থানীয় স্টেকহোল্ডার, ১৬টি পেশার প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধি ও ট্যুরিস্ট পুলিশের সমন্বয়ে একটি বিশেষ সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য হোটেল-মোটেলগুলো সেজেছে বর্ণিল সাজে। যাতায়াতের পথগুলোকেও করা হয়েছে আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে। প্রতিটি আবাসিক হোটেল ও রিসোর্ট যেন পর্যটকদের মন জয় করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। ঈদের ছুটিতে কুয়াকাটা আবারও মুখরিত হয়ে উঠবে পর্যটকদের কলকাকলিতে, এমনটাই আশা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) সেক্রেটারি জেনারেল জহিরুল ইসলাম জানান, পুরো রমজান মাসজুড়ে পর্যটক শূন্য ছিল কুয়াকাটা। সেই সুযোগ হোটেল-মোটেলগুলো পরিপাটি করে তাদের প্রস্তুতি সেরে নিয়েছে। ঈদের ছুটিতে লাখো পর্যটকদের আগমন ঘটবে কুয়াকাটায়, এমনটাই আশা তাদের। সৈকতে দীর্ঘদিন পর্যটক কম থাকায় পুরো সৈকত জুড়ে তৈরি হয়েছে ভিন্নতা। প্রকৃতি যেন তার সৌন্দর্যের ডানা মেলে দিয়েছে এখানে।
সিকদার রিসোর্ট এন্ড ভিলার এজিএম আল-আমিন খান উজ্জ্বল বলেন, আমাদের রিসোর্টে ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত বেশ বুকিংয়ের ফোন আসছে। ইতোমধ্যে ৬০ শতাংশ অগ্রিম বুকড হয়ে গেছে। আশা করছি বাকি দিনগুলোতে আমরা পুরোপুরি বুকিং পাবো। পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে ইতোমধ্যে আমরা সুইমিং, হোটেলের বাড়তি সৌন্দর্য বর্ধনসহ নানা আয়োজন হাতে রেখেছি।
কুয়াকাটা ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কেএম বাচ্চু জানান, পর্যটকদের আগাম সম্ভাবনাকে ঘিরে আমরাও প্রস্তুতি নিয়েছি। যাতে পর্যটকদের পুরোপুরি সেবা ও বিনোদন দিতে পারি। ইতোমধ্যে আমাদের কাছে অনেকগুলো বুকিং আসছে। প্রতিটি উৎসব ঘিরে আমরা প্রস্তুত থাকি দেশবিদেশের পর্যটকদের সেবা দেয়ার জন্য।
কুয়াকাটা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম জানান, ঈদকে ঘিরে বাড়তি পর্যটকের আগমনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে সার্বিক প্রস্তুতি সেরেছে বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি। নিয়মিত নিরাপত্তার পাশাপাশি অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট, স্কাউট থেকে বেশ কয়েকটি টিমে ভাগ করে স্বেচ্ছাসেবক ও সৈকতে রেস্কিউ টিমের সদস্য কাজ করবে। যাতে বাড়তি ভাড়া বা কোনো ধরনের হয়রানির শিকার পর্যটকরা না হন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের ইনচার্জ শাখাওয়াত হোসেন তপু জানান, ঈদের বন্ধে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সার্বিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। লেম্বুরবন থেকে রামনাবাদ চ্যানেল পর্যন্ত বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে- ছিটিয়ে থাকবে ট্যুরিস্ট পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম। জল-স্থল পথে সার্বক্ষণিক আমরা পর্যটকদের সেবায় নিয়োজিত রয়েছি।
Comments