Image description

পাকিস্তানের সামরিক স্থাপনায় হামলার অভিযোগে ৬০ জন বেসামরিক নাগরিকের প্রত্যেককে সর্বনিম্ন ২ বছর থেকে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাবাসের সাজা দিয়েছেন দেশটির সামরিক আদালত। 

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সামরিক আদালত এই রায় ঘোষণা করেছেন বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণসংযোগ দপ্তর।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা এই রায়ের বিরুদ্ধে সামরিক বা অন্য কোনো আদালতে আপিল করতে পারবেন না। গণসংযোগ দপ্তরের বিবৃতিতে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, “এই জাতি, সরকার এবং সেনাবাহিনী সবসময় ন্যায়বিচারের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুত অবস্থান দৃঢ় রেখেছে এবং এই মর্মে ঘোষণা করছে যে আজ ২৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার যে রায় ঘোষণা করা হলো— তা কার্যকর করা হবে এবং কোনো অবস্থাতেই তা লঙ্ঘিত হবে না।”

একই অপরাধে আগের দিন বুধবার ২৫ জন বেসামরিককে কারাদণ্ড দিয়েছিলেন সামরিক আদালত। বিবৃতিতে সে তথ্যও উল্লেখ করেছে সেনা গণসংযোগ দপ্তর।

প্রসঙ্গত, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে ২০২৩ সালের ৯ থেকে ১১ মে পর্যন্ত পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে ব্যাপক দাঙ্গা হয়। সে সময়েই ইতিহাসের প্রথমবারের মতো হামলার ঘটনা ঘটে সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনায়।

২০২৩ সালের ৯ মে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে দু’টি মামলার শুনানিতে হাজিরা দিতে এসে গ্রেপ্তার হন ইমরান খান। পাকিস্তানের সীমান্তরক্ষী ও আধাসামরিক বাহিনী রেঞ্জার্স এবং কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো’র (ন্যাব) একটি যৌথ দল আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্ট ভবন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।

তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার পরপরই নজিরবিহীন বিক্ষোভ শুরু হয় পাকিস্তানে। দেশটির চার প্রদেশের শহরে শহরে বিক্ষোভ শুরু করেন ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) কর্মীরা। পাশাপাশি এ সময় লাহোর, পেশোয়ার, করাচিসহ বিভিন্ন শহরে সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। লাহোর সেনানিবাসের শীর্ষ নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অনেক সেনা কর্মকর্তার বাসভবনেও হামলা হয় সে সময়।

তবে সামরিক আদালতের বুধ ও বৃহস্পতিবারের রায়ে উদ্বিগ্ন বোধ করছে পিটিআই। দলটির নেতা-কর্মীদের আশঙ্কা, সামরিক বাহিনী পিটিআইকে কোনঠাসা করা শুরু করেছে।

উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ)। সামরিক আদালতের বিচার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষ তদন্ত এবং সুষ্ঠুতার অভাব ছিল বলে উল্লেখ করেছে তারা।

সূত্র : রয়টার্স

মানবকণ্ঠ/আরএইচটি