Image description

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সংঘাতের ফলে গত সপ্তাহে আফগানিস্তানে বহু বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারায়। সীমান্তে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে সশস্ত্র সংগঠন তেহেরিক-ই-তালেবানে পাকিস্তান (টিটিপি)। ইসলামাবাদের অভিযোগ, সংগঠনটি আফগানিস্তান সীমান্তে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পেয়েছে। গত ২১ ডিসেম্বর টিটিপির হামলায় পাকিস্তানের ১৬ সেনা সদস্য নিহত হয়। খবর আল জাজিরা।

গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের সামরিক সূত্র আল জাজিরাকে জানায়, তারা আফগানিস্তানের পাকতিয়া প্রদেশে বিমান হামলা চালিয়েছে। ওই অঞ্চলটি পাকিস্তানের উপজাতীয় সীমান্তবর্তী জেলা সাউথ ওয়াজিরিস্তানের কাছে অবস্থিত। 

ওই এলাকায় আশ্রয় নেয়া টিটিপি যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে হামলা চালায় পাকিস্তান বিমান বাহিনী। এ হামলায় নারী ও শিশুসহ ৪৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করা তালেবান। 

পাকিস্তানের বিমান হামলা চালানোর প্রেক্ষিতে পাল্টা হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে আফগান সরকার। শনিবার আফগানিস্তানের তালেবান বাহিনী জানিয়েছে, তারা দুই দেশের মধ্যে সংঘাতপূর্ণ সীমান্তা এলাকা ডুরান লাইনের কাছে একাধিক পয়েন্টকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। 

এ অবস্থার মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ভঙ্গুর সম্পর্কের মধ্যে থাকা দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে কী অপেক্ষা করছে?

সহযোগিতা এবং সংঘাত 

গত কয়েক দশক ধরে আফগান তালেবানের পৃষ্টপোষক হিসেবে পাকিস্তানকে বিবেচনা করা হয়। ১৯৯৬ সালে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর পাকিস্তানের তাদের অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সহযোগিতা দিয়ে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। 

৯/১১ হামলার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন আফগানিস্তানে অভিযান শুরু করে তখন তালেবান নেতারা পাকিস্তানে আশ্রয় চেয়েছিল। এমনকি পাকিস্তান সীমান্তের কাছে মার্কিন ড্রোন হামলার সময় টিটিপি আত্মপ্রকাশ করে। যাদেরকে পাকিস্তান তালেবান বলা হয়। 

এই টিটিপি তাদের আদর্শিক সম্পর্ক আফগান তালেবানের সঙ্গে ভাগাভাগি করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হামলা শুরু করে। ফলে পাকিস্তান সেনাবাহিনী একাধিকবার টিটিপির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে। এতে সশস্ত্র সংগঠনটির অনেক নেতা আফগানিস্তানে আশ্রয় নেয়। ২০২১ সালে যখন তালেবান যোদ্ধারা আফগানিস্তান দখলে নেন তখন পাকিস্তান টিটিপির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আশা দেখে। কিন্তু সংগঠনটির অব্যাহত হামলার ফলে পাকিস্তানের সেই আশা ব্যর্থ হয়েছে। 

বিষয়ে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত ও আফগানিস্তানের বিশেষ প্রতিনিধি আসিফ দুররানি বলেন, টিটিপিসহ অন্যান্য সংগঠনকে বিশেষ করে আইএসআএসকে নিয়ন্ত্রণে তালেবানকে বেগ পেতে হচ্ছে। 

আল জাজিরাকে তিনি বলেন, আফগান তালেবানকে অবশ্যই সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা টিটিপিকে সমর্থন দিবে নাকি পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখবে। কারণ এই গোষ্ঠীকে নির্মূলে আফগান তালেবান সহযোগিতার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করছে। 

মানবকণ্ঠ/আরআই