যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েল মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দেওয়ায় বিপর্যয় আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। ঠান্ডায় সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে নবজাতক ও শিশুরা। এরই মধ্যে তীব্র শীতে ৮ শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, গাজায় তীব্র ঠান্ডায় হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৮টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। হাইপোথার্মিয়ায় মানুষের শরীরের তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও নিচে নেমে যায়। এ সময় তাপ উৎপাদন করার চেয়েও বেশি হারে তাপ হারাতে থাকে শরীর।
গাজায় সবশেষ হাইপোথার্মিয়ায় মারা যাওয়া শিশু ইউসুফের মা বলেন, ‘আমি ইউসুফের মা। আমার ছোট্ট বাচ্চাকে হারিয়েছি। সে খুব ঠাণ্ডার কারণে মারা গেছে। আমার পাশেই ঘুমিয়েছিল, আর সকালে উঠে দেখি, সে জমে গেছে এবং মৃত। আমি কী বলব জানি না। আমার দুঃখ কেউ অনুভব বুঝবে না। আমাদের ভয়াবহ অবস্থাকে পৃথিবীর কেউ বুঝতে পারবে না।’
হাইপোথার্মিয়ায় মানুষের শরীরে কাঁপুনি শুরু হয়ে যায়। প্রাথমিক পর্যায়ের স্বাভাবিক চলাফেরার ক্ষমতা হ্রাস পায়। পরবর্তীতে শ্বাস-প্রশ্বাস এবং হৃৎস্পন্দন আশঙ্কাজনক মাত্রায় কমে আসে। এক পর্যায়ে মানুষ অচেতন হয়ে পড়ে এবং মৃত্যু পর্যন্ত যায়।
এদিকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে ইসরায়েলি হামলায়। আর গত তিনদিনের হামলায় গাজাজুড়ে প্রায় ২০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৪৫ হাজার ৮০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ১ লাখ ৯ হাজারে বেশি মানুষ। আর বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ২৩ লাখ গাজাবাসীর অধিকাংশ।
মানবকণ্ঠ/আরআই
Comments