সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে ভারত। গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে দেশে যখন দাবি তীব্র হচ্ছে তখনই প্রতিবেশি দেশটিতে তার ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর এই খবর পাওয়া গেল। ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে বুধবার সংবাদ প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমস।
গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে গত ২৩ ডিসেম্বর নয়াদিল্লির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যার্পণের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ত্যাগ করেন এবং তখন থেকেই তিনি ভারতে অবস্থান করছেন। সম্প্রতি তার ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। তবে ভারত কবে শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে তা উল্লেখ করা হয়নি প্রতিবেদনে।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (এফআরআরও) শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিল। তবে তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া নিয়ে যে গুঞ্জন রয়েছে সেই কথাও অস্বীকার করা হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, ভারতে শরণার্থী এবং আশ্রয় দেয়ার ব্যাপারে কোনো সুনির্দিষ্ট আইন নেই।
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গুম এবং অন্যান্য অপরাধের অভিযোগে ৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। শেখ হাসিনা ও তার সহযোগী ১২ জনকে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাজির করতে বলেছেন ট্রাইব্যুনাল।
সম্প্রতি বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রধান বলেছেন, পিলখানায় ৭৪ জনের হত্যাযজ্ঞের তদন্তের অংশ হিসেবে তারা শেখ হাসিনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ভারতে যেতে চান।
হিন্দুস্তান টাইমস বিষয়টি নিয়ে জানিয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের এমন উদ্যোগকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণে নয়াদিল্লির ওপর চাপ বৃদ্ধির প্রয়াস হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এর আগে, শেখ হাসিনা ভারতে পালানোর পর গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার ভিসা বাতিল করেছে। আর যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। তবে গত বছরের ৯ আগস্ট সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছিলেন, ‘কেউ শেখ হাসিনার ভিসা বাতিল করেনি। তিনি কোথাও রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেননি। এগুলো সবই গুজব।’ যদিও যুক্তরাজ্যের বাইরে থেকে সেই দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার কোনো বিধান নেই।
মানবকণ্ঠ/আরআই
Comments