মিয়ানমারের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যের একটি গ্রামে বিমান হামলা চালিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। এতে অন্তত ৪০ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
বৃহস্পতিবার বিমান হামলার বিষয়টি ফরাসি বার্তা সংস্থাকে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় একজন উদ্ধারকর্মী ও একটি জাতিগত সংখ্যালঘু সশস্ত্র গোষ্ঠী।
এর আগে বুধবার রাখাইন রাজ্যের রামরি টাউনশিপে আরাকান আর্মি (এএ) নিয়ন্ত্রিত একটি গ্রামে বিমান হামলা চালিয়ে শিশুসহ অনন্ত ৪০ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষ রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। এ সময় প্রায় ৫০০ বসতবাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, বোমা হামলার ফলে ছড়িয়ে পড়া আগুন দ্রুত ঘনবসতিপূর্ণ আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় শত শত ঘরবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
রাখাইনের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) রাজ্যটির নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে আসছে। গত বছর এই রাজ্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের দখল নেয় আরাকান আর্মি। ইতোমধ্যে রাখাইনের রাজধানী সিত্তের সঙ্গে রাজ্যের অন্যান্য অঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী।
মিয়ানমারে ২০২১ সালে সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানে দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকারের পতন ঘটে। এর পর থেকে দেশজুড়ে জান্তাবিরোধী ব্যাপক সশস্ত্র বিদ্রোহের শুরু হয়। রক্তাক্ত এই বিদ্রোহের কেন্দ্রে রয়েছে রাখাইনের সংঘাত।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে জাতিসংঘ বলেছে, মিয়ানমারে চলমান সংঘাতে ৩৫ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। যা গত বছরের তুলনায় ১৫ লাখ বেশি। চলতি বছর দেশটিতে এই সংকট আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে সংস্থাটি। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয়-বিষয়ক কার্যালয় (ওসিএইচএ) বলছে, ২০২৫ সালে দেশটির এক কোটি ৯৯ লাখ জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশেরও বেশি মানুষের সহায়তার প্রয়োজন হতে পারে।
মানবকণ্ঠ/এসআরএস
Comments