শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে ফ্ল্যাট উপহার নেওয়া, সাংবাদিককে হুমকি দেওয়া, রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে অর্থ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি আর আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগের মুখে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক।
মঙ্গলবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। সেখানে নিজের বিষয়ে ওঠা অভিযোগ এবং প্রধানমন্ত্রীর স্বাধীন পরামর্শকের দ্বারা তদন্তের বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন টিউলিপ। নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করে তিনি জানিয়েছেন, সরকারের কাজে যেন কোনো বিঘ্ন না ঘটে সেজন্য তিনি পদত্যাগ করেছেন।
পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেছেন, ‘প্রিয় প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আপনি আমার প্রতি যে আস্থা দেখিয়েছেন তার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আমার অনুরোধের প্রেক্ষিতে দ্রুত এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করায় আমাকে আমার বর্তমান ও পূর্বের আর্থিক এবং জীবনযাত্রার ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়ায় আমি আপনার মিনিস্টারিয়াল স্ট্যানডার্ডের স্বাধীন পরামর্শক স্যার লরি ম্যাগনাসের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
‘আপনি জানেন, তদন্ত করে স্যার লরি নিশ্চিত করেছেন আমি মিনিস্ট্রিয়াল কোড ভঙ্গ করিনি। তিনি জানিয়েছেন, আমি যেসব সম্পত্তির মালিক বা বসবাস করেছি সেগুলো নিয়ে কোনো অসঙ্গতির প্রমাণ তিনি পাননি। এ ছাড়া বৈধ ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে আমার সম্পদ অর্জিত হয়েছে—এমন কিছুও তিনি বলেননি।’
টিউলিপ আরও বলেছেন, ‘আমার পরিবারের সম্পর্কের বিষয়টি সবার জানা। যখন আমি মন্ত্রী হই আমি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপারে সরকারকে সম্পূর্ণ তথ্য দিয়েছি। কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পর, আমাকে উপদেশ দেওয়া হয়েছে, আমি যেন আমার পারিবারিক সম্পর্কের জায়গা উল্লেখ করি। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার খালা। আমি আপনাকে নিশ্চিত করছি, এসব বিষয়ে কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী, স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করেছি এবং করছি।’
‘তবে আমি মনে করছি, যদি আমি মন্ত্রীর দায়িত্ব অব্যাহত রাখি তাহলে সরকারের কাজে বিঘ্ন ঘটতে পারে। লেবার সরকারের প্রতি আমার আস্থা সবসময় থাকবে। এসব কিছু বিবেচনায় নিয়ে আমি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷’
আপনার সরকারে কাজ করার সুযোগের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এই সরকারকে ব্যাকবেঞ্চার এমপি হিসেবে আমার সমর্থন অব্যাহত রাখব।’
মানবকণ্ঠ/আরআই
Comments