
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেছেন, ‘গাজা থেকে কাউকে উৎখাত করা হচ্ছে না।’ বুধবার হোয়াইট হাউসে আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিশেল মার্টিনের সঙ্গে বৈঠকের সময় এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদের আহ্বান জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তিনি এবার তার সেই অবস্থান থেকে সরে আসলেন। বুধবার ট্রাম্প বলেছেন, গাজা থেকে কোনো ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে নেওয়া হবে না। ওভাল অফিসে আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর পাশে বসে ট্রাম্প এসব কথা বলেন।
এদিকে ট্রাম্পের এমন বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে হামাস। এক বিবৃতিতে হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেমি বলেন, যদি মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য গাজা থেকে জনগণকে বাস্তুচ্যুত করার ধারণা থেকে সরে আসার প্রতিনিধিত্ব করে তবে তাদের স্বাগত জানানো হবে।
অপরদিকে বুধবার দোহায় যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের কাছে গাজার জন্য মিশরের নেতৃত্বাধীন পুনর্গঠন পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছে পাঁচ আরব রাষ্ট্র। সেখানে ট্রাম্পের পরিকল্পনার স্পষ্ট বিরোধিতা করা হয়।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকাকে ‘দখল’ করে ‘নিজস্বভাবে পরিচালনার’ একটি বিতর্কিত প্রস্তাব দিয়েছেন। সে সময় তার ওই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় সৌদি আরব, চীন, রাশিয়া, স্পেনসহ বিশ্বের বহু দেশ ও সংগঠন।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউজে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প ঘোষণা দেন, আমরা গাজা দখল করবো এবং একে নতুনভাবে গড়ে তুলবো। আমরা সেখানে অবিস্ফোরিত বোমা ও অস্ত্র নিষ্ক্রিয় করবো এবং দীর্ঘমেয়াদে এর নিয়ন্ত্রণ নেবো। তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনে গাজায় মার্কিন সেনা মোতায়েন করা হতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলেছেন, ট্রাম্পের এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি। গাজার জনগণকে উচ্ছেদ করে মার্কিন নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা জোরপূর্বক দখল হিসেবে গণ্য হবে, যা জেনেভা কনভেনশনসহ আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন।
গাজার অধিকাংশ বাসিন্দা ১৯৪৮ সালের ‘নাকবা’ বা মহাবিপর্যয়ের সময় বাস্তুচ্যুত হওয়া ফিলিস্তিনিদের বংশধর, যারা ইসরায়েলের সৃষ্টি ও দখলদারত্বের শিকার হয়েছিলেন। ফলে তাদের জন্য আরেক দফা উচ্ছেদ মেনে নেওয়া কঠিন হবে।
মানবকণ্ঠ/আরআই
Comments