Image description

২০২৫ সালের নবম-দশম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয়পত্র বইয়ের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দটি রাখা এবং বাদ দেওয়াকে কেন্দ্র করে রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কার্যালয়ের সামনে ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা নিয়ে সরকার যে বিবৃতি দিয়েছে, তা সময়োপযোগী হলেও যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

শুধু তা-ই নয়, পাঠ্যবইয়ের প্রচ্ছদ থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত গ্রাফিতি বাদ দিয়ে এনসিটিবি নিজেকে পতিত কর্তৃত্ববাদের দোসর ও পুনর্বাসনকেন্দ্র হিসেবে পরিচয় দিয়েছে বলে মনে করে সংগঠনটি। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে টিআইবি।

বিবৃতিতে সরকারের উদ্দেশে টিআইবি বলেছে, জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক সমালোচনাকে মিথ্যাচারের মাধ্যমে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বিশ্ববাসীকে বলতে চেয়েছিল-বাংলাদেশে আদিবাসী নেই। তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে স্বীকার করতে চায়নি যে, আদিবাসী পরিচয়ের মানদণ্ড কোনো জনগোষ্ঠী কোনো নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে কতকাল ধরে বসবাস করছেন-তার ওপর নির্ভর করে না। তারা মানতে চায়নি যে, আদিবাসী হচ্ছেন মূলধারার সংখ্যাগরিষ্ঠের বাইরে এমন জনগোষ্ঠী, যারা তাদের নিজস্ব ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং প্রথাগত ও প্রাকৃতিক পরিবেশ-নির্ভর জীবনাচরণের ধারা বহাল রেখে নিজেদের আদিবাসী হিসেবে পরিচিত থাকতে চায়।

দুর্নীতিবিরোধী সংগঠনটি মনে করে, আদিবাসী পরিচয়ের এই ব্যাখ্যা যে বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত, তা না জানা এনসিটিবির জন্য লজ্জাজনক। শুধু তা-ই নয়, সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে কোনোপ্রকার বিচার-বিবেচনা না করেই এক পক্ষের আবদারের দোসর হওয়া পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের ফ্যাসিবাদী আচরণের প্রতিফলন ছাড়া আর কিছুই না।

একইসঙ্গে তা নজিরবিহীন রক্তপাত ও প্রাণহানির বিনিময়ে অর্জিত অন্তর্ভুক্তিমূলক বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে শুধু সাংঘর্ষিকই নয়, প্রতারণাও বটে।