জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) এখনও ৮৩ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন, যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত হয়েছেন। সরকারি খরচে তাদের চিকিৎসা হচ্ছে ঠিকই কিন্তু পরিবারের ভরণ-পোষণ অনিশ্চিত। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন কিনা তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। কারণ এদের অনেকের হাত-পা এখনও অচল।
গত ৪ আগস্ট মিরপুর ১০-নম্বর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞানের ছাত্র আবদুল্লাহ আহমেদ। তাঁর ওপর পুলিশ নির্যাতন চালালে রাস্তায় পড়ে যান তিনি। এরপর তাঁর পায়ের ওপর গাড়ি তুলে দেয় পুলিশ। একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর ৭ আগস্ট থেকে তিনি ভর্তি হন পঙ্গু হাসপাতালে।
আবদুল্লাহ আহমেদ বলেন, পঙ্গু হাসপাতালে তিনি আছেন সাড়ে তিন মাসের বেশি সময় ধরে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, পায়ের রিং খুলতে আরও এক থেকে দেড় বছর সময় লাগবে। রিং খুললেও আগের মতো পা ভাঁজ করা যাবে না আজীবন।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, পাশেই চিকিৎসা নিচ্ছেন নারায়ণগঞ্জের চিটাগাং রোডের অটোচালক নাদিম হাওলাদার। ২০ জুলাই আহত হয়ে এখনও চিকিৎসা নিচ্ছেন। কবে পুরোপুরি সুস্থ হবেন, তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন নাদিম।
নাদিম হাওলাদার বলেন, ‘আমার সামনের রোববার একটা অপারেশন আছে। এর পর আর অপারেশন নাও লাগতে পারে। তবে আমি আমার হাতে কোনো জোর পাই না। হাত মুঠ করতে পারি না।’
চিকিৎসকেরা জানান, এখন যারা ভর্তি রয়েছেন তাদের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। চিকিৎসায় উন্নতি হলেও স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে।
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক ডা.কাজী শামীম উজ-জামান বলেন, এখন যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি আছেন তাদের মধ্যে যাঁদের নার্ভ ইনজুরি আছে তাঁদের উন্নতিতে সময় লাগবে। চিকিৎসার মাধ্যমে তাঁরা অনেকটা সুস্থ হলেও পুরোপুরি স্বাভাবিক জীবনে ফেরা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে তাঁদের সব ধরনেই চিকিৎসা সেবাই দেওয়া হচ্ছে।
১৫ জুলাই থেকে পাঁচ আগস্ট পর্যন্ত এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৮৫০ জন। এর মধ্যে ২১ জন হাত বা পা হারিয়েছেন।
মানবকণ্ঠ/আরআই
Comments