Image description

বিএসসিতে আগের মতো চুরিচামারি ও হেরফের হবে না জানিয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, গত তিন মাসে আপনারা শোনেননি এ সরকারের কেউ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। কোনও অসৎ ব্যক্তি আমাদের কেবিনেটে নেই। ১০০ টাকাও যদি ঘুষ খায় তাহলে আমি চেষ্টা করবো চাকরি যেন না থাকে। আমি কথা দিয়ে যাচ্ছি, চোর ধরা পড়লে রক্ষা নাই।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) বিকালে নগরীর পতেঙ্গা বোট ক্লাবে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) ৪৭তম বার্ষিক সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সভায় শেয়ার হোল্ডারদের জন্য ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন দেওয়া হয়।

এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের যেসব সমস্যা আছে সেগুলো দূর করার চেষ্টা করছি। চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়ছে। এমনকি বিশ্বব্যাংক থেকে অনেক সংস্থা এখানে বিনিয়োগে আগ্রহী।

আগামী দুই বছরে বিএসসির বহরে আরও আটটি জাহাজ যুক্ত হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) জাহাজের বহর আরও বড় করার চেষ্টা চলছে। সরকার অনুমোদন দিলে আমরা চুক্তি সই করে ফেলব এবং দুই বছরের মধ্যে জাহাজ গুলো পাওয়া যাবে। এ ছাড়া শিপিং কর্পোরেশন নিজের অর্থায়নে দুইটি বাল্ক ক্যারিয়ার কিনবে। আমরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিচ্ছি যেখানে আমরা এক থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে ব্যবহার হয়েছে এমন জাহাজ কিনবো।এর মধ্যে বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাপানে দুইটি জাহাজের সন্ধান পেয়েছেন। আমি বা আমাদের প্রতিনিধি কেউ গিয়ে সব ঠিক পেলে আমরা অন দ্যা স্পট জাহাজ কিনে ফেলব। আশাকরি জাপানি শিপ অবশ্যই ভালো হবে।

শেয়ার হোল্ডাররা আরও বেশি লভ্যাংশ পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, শেয়ারের বাজারে বর্তমান দুর্দিনে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন শেয়ার হোল্ডারদের জন্য ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আশা করছি, আগামী বছর এ লভ্যাংশ আরও বাড়বে।

অনুষ্ঠানে বিএসসি ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মাহমুদুল মালেক বলেন, ৪৮৭ দশমিক ৭৪ কোটি টাকা আয় হয়েছে এই এক বছরে। এ ছাড়া অন্য খাতে আয় হয়েছে প্রায় ১০৮ দশমিক ৪৪ কোটি টাকা। সর্বমোট প্রায় ৫৯৬ দশমিক ১৯ কোটি টাকা আয় হয়েছে বিএসসির। আয়ের বিপরীতে ১৮৯ দশমিক ৬১ কোটি টাকা পরিচালনা ব্যয় হয়েছে। প্রশাসনিক ও আর্থিক খাতে ব্যয় হয়েছে ১২১ দশমিক ৯৮ কোটি টাকা। সর্বমোট ব্যয় হয়েছে ৩১১ দশমিক ৬০ কোটি টাকা। এ অর্থ বছরে কর সমন্বয়ের পর সংস্থার নীট মুনাফা হয়েছে ২৪৯ দশমিক ৬৯ কোটি টাকা।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে নীট আয় বেড়েছে প্রায় তিন দশমিক ৪০ কোটি উল্লেখ করে মাহমুদুল মালেক বলেন, গত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে মোট আয় হয়েছিল ৬৬৭ দশমিক ২৩ কোটি টাকা ও মোট ব্যয় হয়েছিল ৩৭৫ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা এবং কর সমন্বয়ের পর নীট মুনাফা হয়েছিল ২৪৬ দশমিক ২৯ কোটি টাকা। নীট আয় বেড়েছে প্রায় তিন দশমিক ৪০ কোটি টাকা। নীট লাভের ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গত ৩০ জুন পর্যন্ত বিএসসির পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ১৫২ কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার ৪০০ টাকা। এর মধ্যে সরকারের শেয়ারের পরিমাণ ৭৯ কোটি ৪৬ লাখ ৩৪ হাজার ৪০০ টাকা এবং বেসরকারি শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ারের পরিমাণ ৭৩ কোটি সাত লাখ ১৬ হাজার টাকা। সরকারের শেয়ারের সংখ্যা সাত কোটি ৯৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৪০ টি যা মোট শেয়ারের ৫২ দশমিক ১০ শতাংশ এবং বেসরকারি শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ারের সংখ্যা সাত কোটি ৩০ লাখ ৭১ হাজার ৬০০ টি যা মোট শেয়ার সংখ্যার ৪৭ দশমিক ৯০ শতাংশ। এ ছাড়া মোট সম্পদের পরিমাণ ৩ হাজার ৮১১ দশমিক ৫৩ কোটি টাকা এবং মোট বহি: দেনার পরিমাণ ২,২৫৬ দশমিক ১৬ কোটি টাকা বলেও জানান তিনি।

মানবকণ্ঠ/এসআরএস