চাঁদপুরে জাহাজে ৭ খুনের প্রকৃত ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে নৌযান শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে এই কর্মসূচি শুরু করেন তারা। সঙ্গে পণ্যবাহী নৌযান ধর্মঘটও অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ফেডারেশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। সংগঠনের সভাপতি মো. শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম এ বিষয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণসহ বেশ কিছু দাবি জানান তারা।
বালুসহ সকল পণ্যবাহী নৌযান শ্রমিকদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান শ্রমিক নেতারা। তবে দুর্ভোগের বিষয় বিবেচনা করে আপাতত সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে বলেও জানিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন সভাপতি মো. শাহ আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বাগেরহাটের মূলঘর পূর্ব ইউনিয়নের জগদীশ মন্ডলের ছেলে আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফান সার বোঝাই পণ্যবাহী ‘‘এমভি আল বাখেরা’’ জাহাজের ৮ জন স্টাফকে ঠান্ডা মাথায় যেভাবে কুপিয়েছেন। তিনি বিশাল একটি জাহাজটি একাই চালিয়েছেন। এতে মনে হয় এটা তাঁর একার কাজ হতে পারে না। আমরা এই ঘটনার প্রকৃত রহস্য এবং এর সঙ্গে অন্য কারা ছিল সেটা প্রশাসনের সঠিক তদন্ত দাবি করছি।’
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন সভাপতি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের সারাদেশে ১০ হাজার ছোট পণ্যবাহী নৌযান ও লক্ষাধিক শ্রমিকদের নিরাপত্তাও দাবি করছি। যারা ওই জাহাজে হতাহতের শিকার হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে জনপ্রতি ২০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণও দাবি করছি। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতিসহ পণ্যবাহী নৌযান ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।’
এদিকে চাঁদপুরে গ্রেপ্তার আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফানকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার পর নানা তথ্য বের করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর নৌ পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার ইমতিয়াজ আহমেদ।
নৌ পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এক বছর আগে আকাশ মন্ডল ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ৮ মাস আগে তিনি ওই জাহাজে সুকানির চাকরি নেন খুনের শিকার জাহাজ মাস্টার গোলাম কিবরিয়ার মাধ্যমে।’
জাহাজ মালিক মাহবুব মোরশেদ বলেন, ‘আমরা ওই জাহাজে গোলাম কিবরিয়া ও ইঞ্জিন চালক সালাউদ্দিন মোল্লাকে চাকরি দিয়েছিলাম। বাকিরা সবাই গোলাম কিবরিয়ার মাধ্যমে ওই জাহাজে চাকরি নেয়।’
এই ঘটনার পর চাঁদপুর নৌরুটে সব ধরনের নৌযান নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলে স্থানীয় সাধারণ চলাচলকারী লঞ্চযাত্রী ও নৌযান শ্রমিকেরা দাবি করছেন।
এ বিষয়ে চাঁদপুর নৌ পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘এটা ব্যক্তিগত আক্রোশের ঘটনা ছিল। নদীতে কোনো ধরনের নৌযান নিরাপত্তাহীনতায় নেই। এছাড়া আমাদের নৌ পুলিশ ও কোস্টাগার্ড সব সময় সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।’
Comments