সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে চলা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র। আজ বৃহস্পতিবার সিনিয়র সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবির স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গতকাল সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে সারারাত ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নানান স্থাপনায় চলা ভাঙচুর ও হামলার ঘটনায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। এই ঘটনাগুলোকে আইনের শাসন, আইনের সমান আশ্রয় লাভ ও আইনের যথাযথ প্রয়োগের পরিপন্থী বলে আসক মনে করে।’
আসক আরো জানিয়েছে, ‘গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে হামলা এবং ধ্বংস করার মতো একটি ঘোষণা গতকাল দিনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার চালাতে দেখা যায়। এর পরপরই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে সেখানে ছাত্র-জনতা নামে একদল লোক জড়ো হয়ে ভাঙচুর, তান্ডব, লুটপাট শুরু করে। এক পর্যায়ে সেখানে আগুন দেওয়া হয়। প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর একটি দল সেখানে উপস্থিত থাকলেও তাদের কোনো তৎপরতা ছিল না, বরং সেনাবাহিনীর দলটি এক পর্যায়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। সন্ধ্যায় শুরু হওয়া এই তান্ডব ধীরে ধীরে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন স্থাপনা, বাড়ি ও সম্পত্তিতে ভাঙ্গচুর ও লুটপাট শুরু হয়।’
‘আজকে সকালে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী ধানমন্ডির সুধা সদনে লাগানো আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের নিরাপত্তাহীনতার আশংকাও উদ্বেগজনক।’
‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী সকলের আইনের সমান আশ্রয় লাভ, আইনের দৃষ্টিতে সমান অধিকার, সম্পত্তির অধিকার ও আইনের যথাযথ প্রক্রিয়ার অনুসরণের অধিকার রয়েছে। এই অধিকারগুলোর প্রয়োগ নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের ওপর বর্তায়। এর অন্যথায় সরকারের ব্যর্থতা বলে প্রতীয়মান হবার অভিযোগ উত্থাপনের সুযোগ থাকে।’
আইন ও সালিশ কেন্দ্র জানিয়েছে, ‘প্রতিষ্ঠার জন্মলগ্ন থেকেই আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) মানবাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং নিশ্চিতের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। যেকোনো সময়ে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের পরিপন্থী যেকোনো কাজেই আসক সোচ্চার ছিল এবং আছে। জুলাই গণঅভ্যূত্থানের মানবাধিকার, গণতন্ত্র, আইনের শাসনের চেতনার প্রতি আসক পরিপূর্ণ শ্রদ্ধাশীল এবং বলিষ্ঠভাবেই সমর্থন করে। আসক মনে করে চলমান তান্ডবগুলো গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পরিপন্থী। এছাড়াও দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে এই ধরনের ঘটনা হুমকিস্বরূপ।’
আসক সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে আইন, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহ্বান জানাচ্ছে। পাশাপাশি যেকোনো ধরনের কার্যক্রম আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পরিচালনা করা উচিত বলে আসক মনে করে।
Comments