Image description

জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে দিন দিন বাড়ছে বায়ুদূষণ। মেগাসিটি ঢাকাও রয়েছে সেই বায়ুদূষণের কবলে। বুধবার ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় রয়েছে এই শহরের বায়ু।  সকাল ৮টা ৪৯ মিনিটের রেকর্ড অনুসারে ২৬৩ বায়ুমান নিয়ে শীর্ষ আছে ঢাকা। 

বাতাসের গুণমান সূচক (একিউআই) দিয়ে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ-এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বায়ুমান নির্ধারণকারী ওয়েবসাইট এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিআইয়ের তালিকায় ঢাকা ছাড়া বায়ুদূষণে শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো—ভারতের দিল্লি (২২৪), ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর কিনশাসা (১৮৬), পাকিস্তানের লাহোর (১৭৯) ও নেপালের কাঠমান্ডু (১৭৫)।

এর আগে, মঙ্গলবার বায়ুদূষণে শীর্ষ ৬ নম্বরে ছিল ঢাকা। তবে সেদিন বিশ্বজুড়ে বায়ুদূষণে শীর্ষ পাঁচে থাকা শহরগুলো ছিল যথাক্রমে—ভারতের দিল্লি (২৬৩), সেনেগালের ডাকার (২৩৫), পাকিস্তানের লাহোর (১৮৪), ভিয়েতনামের হ্যানয় (১৮৬)।

অন্যান্য দেশের বায়ুমানের সঙ্গে তুলনা করে তালিকা করা হয় বলে বায়ুমানের অবনতি হলেও প্রায়ই তালিকার নিচের দিকে চলে আসে ঢাকার অবস্থান। তবে, বেশির ভাগ সময় ঢাকার বাতাস খুবই অস্বাস্থ্যকর, অস্বাস্থ্যকর এবং সংবেদনশীল মানুষের জন্য ক্ষতিকর পর্যায়েই থাকে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

মানবকণ্ঠ/আরআই