Image description

শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আজ সোমবার সারা দেশ মেতে উঠবে ঈদের আনন্দে। কিন্তু আট হাজারের বেশি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর ঘরে ঈদ আনন্দের ছোঁয়া লাগেনি। মেলেনি বেতন-ভাতা। শিক্ষকদের অভিযোগ, কর্মকর্তাদের সদিচ্ছার অভাবেই এই অবস্থা। তারা চাইলেই ঈদের আগে বেতন-ভাতা দিতে পারতেন।

ভোগান্তি লাঘবের কথা বলে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি)’র মাধ্যমে বেতন-ভাতা দেয়া শুরু হলেও এখন এটি শিক্ষকদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেতন-ভাতা না পাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর বলছে, মাঠ পর্যায় থেকে তথ্য যাচাই শেষ না হওয়ায় ৮ হাজারের বেশি শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন দেওয়া সম্ভব হয়নি। ঈদের পর দ্রুত অর্থ ছাড়ের ব্যবস্থা করা হবে।

জানতে চাইলে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আজাদ খান বলেন, ‘চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মোট এমপিওভুক্ত জনবল ছিল ৩ লাখ ৯৬ হাজার ৬৬৫। ওই মাসে এমপিও ছাড় হয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৩৫০ জনের। অবশিষ্ট ৮ হাজার ৩৮০ জনের তথ্য সংশোধন চেষ্টা ছিল, কিন্তু পুরো তথ্য মাঠ পর্যায় থেকে আসেনি। যার কারণে তাদের বেতন-ভাতা দেওয়া সম্ভব হয়নি।’

শিক্ষক-কর্মচারীরা বলছেন, মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব উদযাপনে যখন সবাই ব্যস্ত। তখন প্রায় সাড়ে ৮ হাজার পরিবারের ঘরে ঈদ আনন্দ নেই। মাউশি কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে দীর্ঘদিনেও মাঠ পর্যায় থেকে তথ্য যাচাই হয়নি। এর দায় মাউশিকেই নিতে হবে। 

জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা পান। তবে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে ছাড় হলেও তা রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি ব্যাংকের মাধ্যমে ‘অ্যানালগ’ পদ্ধতিতে ছাড় হয়। এই অর্থ তুলতে শিক্ষকদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হতো।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ইএফটিতে বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওর বেতন-ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের ২০৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অক্টোবর মাসের এমপিও ইএফটিতে ছাড় হয়। পরবর্তী সময়ে গত ১ জানুয়ারি ১ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতার সরকারি অংশের টাকা পেয়েছেন।

দ্বিতীয় ধাপে ৬৭ হাজার, তৃতীয় ধাপে ৮৪ হাজার এবং চতুর্থ ধাপে ৮ হাজার ২০০ এর অধিক শিক্ষক-কর্মচারীকে ডিসেম্বর মাসের বেতন দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা জানুয়ারি মাসের বেতনও পেয়েছেন। তাদের ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন ও ঈদ উৎসব ভাতা গত শুক্রবার তুলতে পেরেছেন।

অন্যদিকে ৫ম ধাপে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীকে দুই মাসের বেতন ও ঈদ উৎসব ভাতা দেওয়া হয়েছে। তারও গত শুক্রবার ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করেছেন। তবে এখনো বেতন-ভাতার বাইরে রয়েছেন ৮ হাজারের বেশি শিক্ষক-কর্মচারী।