Image description

সহকর্মী ও স্বজনদের কান্নায় ভাসিয়ে চিরনিন্দ্রায় শায়িত হলেন বান্দরবানে নাইক্ষ্যংছড়ির তমব্রু সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে নিহত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্য নায়েক মো. আক্তার হোসেন। 

শনিবার (১ নভেম্বর) সাড়ে ১১টার দিকে ভোলার দৌলতখান ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে তাকে পৌরসভার অধ্যক্ষ জাকির হোসেন ফাউন্ডেশন জামে মসজিদের কবরস্থানে দাফন করা হয়। 

এর আগে, সকাল ৯টার দিকে তার মরদেহ বহনকারী বিজিবির একটি হেলিকপ্টার দৌলতখান হেলিপ্যাডে এসে পৌঁছায়। সেখানে তার মরদেহ গ্রহণ করেন বিজিবির ২১ব্যাটালিয়ান খুলনা থেকে আসা সুবেদার মো. হানিফের নেতৃত্বে ২০ সদস্যের একটি দল ও পরিবারের সদস্যরা।

পরে তাকে পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কলেজ রোডের নিজ বাড়িতে নেওয়া হয়। মরদেহ বাড়ি আনার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজন ও প্রতিবেশীরা। আহাজারিতে ভাড়ি হয়ে ওঠে আশপাশের পরিবেশ। সেখানে শেষ বিদায় জানান আত্মীয় স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীরা।

এদিকে স্বামীর অকাল মৃত্যুতে তিন সন্তান নিয়ে দিশেহারা স্ত্রী মুন্নি বেগম। পারিবারিক সূত্র জানায়, গত ১২ অক্টোবর সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের আরাকান আর্মির পুঁতে রাখা একটি মাইন বিস্ফোরণের আহত হন বিজিবি সদস্য আক্তার হোসেন। ২০ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ঢাকার সামরিক হাসপাতালে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে বাবা আবদুল মান্নান, মা আমেনা বেগম, স্ত্রী মুন্নি বেগম এবং দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন আক্তার।

স্ত্রী মুন্নি বেগম গৃহীনি। বড় ছেলে জিদান বরিশাল বিএম কলেজে অনার্স ২য় বর্ষে ও একমাত্র সুশিলা আক্তার অজিহা দৌলতখান বালিকা বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়েন। ছোট ছেলে সাফওয়ানের বয়স চার বছর। সাত ভাই বোনের মধ্যে আক্তার তৃতীয়। গত ৭ বছর আগে বড় ভাই জাকির হোসেন স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসে কম্পানিতে চাকরিরত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে স্ত্রী মুন্নি বেগম জানান, আশা ছিল বড় ছেলের একটা চাকরির ব্যববস্থা করে তিনি চাকরি থেকে চলে আসবেন। সব সময়ই বড় ছেলের চাকরির বিষয়ে কথা বলতেন। ছোট ছেলে সাফওয়ান তার খুব আদরের ছিলেন। হঠাৎ তার মৃত্যুতে তিন সন্তান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্ত্রী মুন্নি বেগম। তিনি সরকারের কাছে বড় ছেলের জন্য একটা চাকরি দাবি করেন।