গুম প্রতিরোধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে ‘গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার অধ্যাদেশ’ জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সোমবার (১ ডিসেম্বর) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
নতুন এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী, গুমের অপরাধকে জামিন ও আপস অযোগ্য হিসেবে গণ্য করা হবে। বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত ও সুষ্ঠু করতে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের কথাও বলা হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন: গুম হওয়া ব্যক্তির মৃত্যু ঘটলে অথবা গুমের ৫ বছর পরও তাকে জীবিত বা মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব না হলে, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হবে।
গুম ও তথ্য গোপন: কাউকে আটক বা অপহরণের পর সরকারি বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ যদি তা অস্বীকার করেন বা তথ্য গোপন করেন, তবে তাকে যাবজ্জীবন বা সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হবে।
সাক্ষ্য বিনষ্ট ও গোপন কেন্দ্র: গুমের আলামত নষ্ট, বিকৃত করা কিংবা গুমের উদ্দেশ্যে গোপন আটককেন্দ্র নির্মাণ বা ব্যবহার করলে ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং ২০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
অধ্যাদেশে কঠোরভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, গুমের আদেশদাতা বা অনুমতি প্রদানকারী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও অধস্তন অপরাধীর সমান শাস্তির মুখোমুখি হবেন। এ ক্ষেত্রে ‘রাষ্ট্রের নিরাপত্তা’ বা অন্য কোনো অজুহাত দেখিয়ে পার পাওয়া যাবে না। এমনকি অভিযুক্ত ব্যক্তি পলাতক থাকলেও তার অনুপস্থিতিতে বিচার কাজ সম্পন্ন করা যাবে।
এর আগে গত ৬ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই অধ্যাদেশ চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম একে ‘ঐতিহাসিক’ উল্লেখ করে জানান, আন্তর্জাতিক আইন মেনেই এটি তৈরি করা হয়েছে। গুম কমিশনে ইতোমধ্যে প্রায় দুই হাজার অভিযোগ জমা পড়লেও প্রকৃত সংখ্যা চার হাজারের মতো হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।




Comments