আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে বাংলাদেশে কারাবন্দি চার সিনিয়র সাংবাদিকের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেছে কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছে নিউইয়র্কভিত্তিক সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষাকারী এই সংগঠনটি।
গত সোমবার ই-মেইলের মাধ্যমে এই চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে যে চার সাংবাদিকের মুক্তির আহ্বান জানানো হয়েছে তারা হলেন—ফারজানা রূপা, শাকিল আহমেদ, মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্ত।
সিপিজের দাবি, এই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মূলত ‘প্রতিহিংসামূলক’ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব মামলার স্বপক্ষে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণের অভাব রয়েছে বলেও উল্লেখ করেছে সংস্থাটি। চিঠিতে বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদ এবং আন্তর্জাতিক আইনের (আইসিসিপিআর) কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলা হয়, ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে তাদের মুক্তি দিয়ে কাজে ফেরার সুযোগ দেওয়া উচিত।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি এই সাংবাদিকদের অমানবিক পরিস্থিতির বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে চিঠিতে।
তাদের রাখা হয়েছে মাত্র ৩৬ বর্গফুটের ছোট সেলে।
দরজার বদলে লোহার শিক থাকায় প্রচণ্ড শীত ও মশার উপদ্রব সহ্য করতে হচ্ছে।
কংক্রিটের মেঝেতে তোশক ছাড়াই ঘুমাতে হচ্ছে।
পর্যাপ্ত খাবার ও চিকিৎসাসেবা থেকেও তারা বঞ্চিত।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত নভেম্বরে এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাও হত্যা মামলা বন্ধের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু সিপিজে বলছে, ড. ইউনূস দায়িত্ব নেওয়ার পর (৮ আগস্টের পর) এই চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে নতুন করে হত্যা মামলা হয়েছে এবং বারবার তাদের জামিন আবেদন নাকচ করা হয়েছে। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্নার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়েরের বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
শুধু বাংলাদেশ নয়; ভারত, আফগানিস্তান, কম্বোডিয়া ও ফিলিপাইনসহ এশিয়ার আরও ৬টি দেশের সরকারকেও কারাবন্দি সাংবাদিকদের মুক্তির আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিয়েছে সিপিজে। সংস্থাটির তথ্যমতে, বর্তমানে এশিয়ায় অন্তত ১০৬ জন সাংবাদিক কারাগারে রয়েছেন, যার শীর্ষে রয়েছে চীন, মিয়ানমার ও ভিয়েতনাম।




Comments