বাংলাদেশের ভূখণ্ডে বসবাসরত মানুষদের সৌভাগ্য যে আমরা এমন একজন দূরদর্শী দুর্দান্ত সাহসী, শৌর্যে-বীর্যে উন্নত শীর, উদ্দাম গিরি শৃঙ্গের মতো অটল-অবিচল দেশনেতা পেয়েছিলাম। যিনি তার নিষ্ঠা, ভালোবাসা এবং দেশের জনগণের প্রতি অমলিন শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসের বাতাবরণে তার বলিষ্ঠ উদাত্ত কণ্ঠে এক দণ্ডে সমস্ত বাংলাবাসীকে মিলিত করেছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামে। নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর বাংলাদেশ স্বাধীন হলো।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির জনক হিসেবে পরিচিতি পেলেন। তিনি এমন একজন প্রতিভাবান এবং দূরদর্শী নেতা ছিলেন যার বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রতি অবিচল ভালোবাসা দেশের স্বাধীনতার ভিত্তি স্থাপন করেছিল। ন্যায়বিচারের প্রতি অটল প্রতিশ্রুতি এবং জনগণের সংগ্রামের প্রতি গভীর সহানুভূতির মাধ্যমে, মুজিবুর রহমান নিপীড়ক শাসনের বিরুদ্ধে গড়ে তুলেছিলেন একটি শক্তিশালী গণআন্দোলন যার পরিণতি একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সৃষ্টি। তার নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছিল একটি শক্তিশালী গঠনতন্ত্র যার চারটি মূল স্তম্ভ জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে তিনি নিয়ে এলেন রূপান্তরকারী পরিবর্তন যার কারণে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি দক্ষিণ এশীয়ায় একটি বিশাল ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। শুধু সামাজিক, অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিকভাবেই বাংলাদেশকে তিনি দুর্বার গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাননি, শিক্ষায়ও এনেছিলেন এক অভিনব পরিবর্তন। তিনিই বাংলাদেশের আধুনিক শিক্ষার স্থপতি।
যার শিক্ষা দর্শন ছিল একটি আত্মনির্ভরশীল ও প্রগতিশীল জাতির জন্য তার বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আজ তার শিক্ষা দর্শনের মূল দিকগুলোকে নিয়েই কিছুটা আলোকপাত করবো। তার সময়কালে শিক্ষার প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি বাংলাদেশের উন্নয়নকে প্রভাবিত করেছিল বিশেষভাবে। কিন্তু আজ আমাদের শিক্ষায় নেমে এসেছে এক ভয়ানক অসুস্থতা। সময়ের বিবর্তনে আজ আমরা বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শনের মূল নীতিগুলো থেকে অনেক দূরে সরে এসেছি। শিক্ষায় দেশ যেন উল্টোপথে হাঁটছে, যা হবে ভয়ানক এবং হোঁচট খেয়ে একদিন জাতীর সর্বনাশ ডেকে আনবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শিক্ষার দর্শন ছিল সামাজিক বা অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট নির্বিশেষে সকল স্তরের শিক্ষাব্যবস্থায় অর্থাৎ প্রাথমিক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা প্রদান করা। তিনি বিশ্বাস করতেন যে একমাত্র শিক্ষাই পারে ব্যক্তিকে ক্ষমতায়ন করতে এবং তাদের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করতে। তিনি এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন যেখানে প্রত্যেকেরই মানসম্পন্ন শিক্ষার সুযোগ থাকবে। শিক্ষার মাধ্যমে জাতীয় প্রগতি ও উন্নতি দেখার স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতীর পিতা। এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা যা হবে সর্বজনীন, সহজলভ্য, গুণগত, নৈতিক এবং প্রায়োগিক। শুধু তাই নয় তিনি শিক্ষাব্যবস্থাকে করতে চেয়েছিলেন আন্তর্জাতিক মানের যা হবে জাতির সত্যিকারের মেরুদণ্ড। আর তাইতো স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের শিক্ষার রূপান্তরে কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশনের রূপরেখা তৈরি করেছিলেন। ১৯৭২ সালে গঠিত এই কমিশন আধুনিক, প্রায়োগিক ও সময়োপযোগী শিক্ষাব্যবস্থার একটি নজিরবিহীন শিক্ষা পরিকল্পনা প্রণয়ন করে। তবে কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশনের মূল স্তম্ভগুলোকে নিয়ে আলাদা একটি লেখায় বিশেষভাবে আলোকপাত করবো। যেহেতু জাতির পিতার শিক্ষা দর্শনই এই কমিশনের মূল রূপরেখাকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করেছে তাই জাতির পিতার শিক্ষা দর্শনের মূল বিষয়গুলোকে নিয়ে একটু আলোচনা করলে আমাদের সকলের কাছে বুঝতে সুবিধা হবে যে আমাদের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা কেন এক সংকট সময় পার করছে। আর তার একমাত্র কারণ শিক্ষায় দূরদর্শিতার অভাব, সুদূরপ্রসারী বাস্তবসম্মত পরিকল্পনার অনুপস্থিতি। তার উপরে চলছে শিক্ষাখাতে বিশেষ দুর্বৃত্তায়ন এবং কুশিক্ষিতদের প্রভাব। শিক্ষার প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৃষ্টিভঙ্গির মূলে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন তার নিজের অভিজ্ঞতা। এ সময় তিনি প্রত্যক্ষভাবে অবলোকন করেন, দারিদ্র্য ও বৈষম্য কীভাবে শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা অর্জনে বাধা দিচ্ছে। তখন থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখা শুরু করলেন এক নতুন শিক্ষাব্যবস্থাকে নিয়ে। তিনি নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন যে প্রতিটি শিশু তাদের আর্থিক পরিস্থিতি নির্বিশেষে শিক্ষা লাভের সুযোগ পাবে। আর তাই স্বাধীন রাষ্ট্রের স্থপতি হয়ে তিনি শিক্ষাকে গুণসম্পন্ন ও সর্বজনীন করার লক্ষ্যে বাংলাদেশে প্রত্যেকের জন্য বিনামূল্যে প্রাথমিক শিক্ষার পাশাপাশি বিদেশে এবং দেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য বৃত্তি প্রদানের মতো বেশ কিছু উদ্যোগ চালু করেন। আর সেই সুবাদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মস্কো সফরের পরপরই ১৯৭২ সালের ৭ আগস্ট সোভিয়েত সরকারের বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের প্রথম দল ইউএসএসআর-এ পৌঁছায়। শুরু হলো শিক্ষায় এক নতুন অধ্যায়। শিক্ষায় সর্বজনের প্রবেশাধিকারের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে শিক্ষার মান নিশ্চিত করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করেছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ভর্তির আগে পরীক্ষা প্রবর্তনের মতো সংস্কার বাস্তবায়ন করেন। সমসাময়িক প্রয়োজনের সাথে প্রাসঙ্গিকতাকে বিবেচনায় এনে পরিকল্পিত পাঠ্যক্রম এবং দেশের চাহিদার সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা প্রকল্পের জন্য অর্থায়নের ব্যবস্থা করেন। বঙ্গবন্ধুর একটি বিখ্যাত উক্তি থেকেই অনুধাবন করা যাবে যে শিক্ষার প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৃষ্টিভঙ্গিটি কেমন ছিল: শিক্ষা একটি মৌলিক অধিকারÑ কোনো বিশেষাধিকার নয়। এই উক্তিটির মাধ্যমে, তিনি স্পষ্ট করেছেন যে প্রত্যেকেরই একটি গুণগত মানের শিক্ষা পাওয়ার অধিকার রয়েছে যাতে করে প্রত্যেকটি মানুষ তার সম্ভাবনাগুলোকে পুরোপুরি বিকাশ করতে সক্ষম হয়। যাতে তারা সমাজের অগ্রগতি এবং উন্নয়নে অর্থপূর্ণভাবে অবদান রাখতে পারে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শিক্ষার দর্শনটি ছিল সকলের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা যাতে সমাজের সকল সদস্য সামাজিক বা অর্থনৈতিক পটভূমির ভিত্তিতে কোনো প্রকার বৈষম্য বা পক্ষপাত ছাড়াই সমানভাবে উপকৃত হতে পারে। বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শনের প্রথম স্তম্ভটি হলো শিক্ষার সর্বজনীন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা। তিনি শিক্ষার সর্বজনীন প্রবেশাধিকারে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন। তিনি এমন একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন যেখানে প্রতিটি শিশু, তাদের পটভূমি নির্বিশেষে, শিক্ষা লাভের সুযোগ পাবে। এই অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতির লক্ষ্য ছিল বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যবধান দূর করা এবং সমতা বৃদ্ধি করা। জাতির পিতা বুঝতে পেরেছিলেন যে শিক্ষা ব্যক্তি ও সম্প্রদায়ের সম্ভাবনার মূল চাবিকাঠি এবং তিনি এটিকে সকলের কাছে সহজলভ্য করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন। এই জাতীয় শিক্ষা পদ্ধতির ব্যবস্থাই আমরা উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে দেখতে পাই, অন্তত প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ে। অথচ বঙ্গবন্ধু পঞ্চাশ বছর আগেই এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলেন। বর্তমানে পশ্চিমা বিশ্বের শিক্ষাব্যবস্থায় যে ব্যাপারটি বেশ গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে তা হলো শিক্ষায় সকলের “অন্তর্ভুক্তি এবং সমতা”। আর অন্তর্ভুক্তিকরণে বঙ্গবন্ধুর অঙ্গীকার ছিল নিছক প্রবেশাধিকারের বাইরে প্রসারিত। তিনি মেয়েদের এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠী স্কুলে যাওয়াকে নিশ্চিত করতে বাস্তবসম্মত নীতির বাস্তবায়নে জোড় দিয়েছিলেন। তার সরকার শিক্ষার প্রতিবন্ধকতা কমাতে সঠিক ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করেছিলেন খুব অল্প সময়ের মধ্যেই, যেমন বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক প্রদান এবং মহিলা শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তি চালু করা। এই প্রচেষ্টাগুলো ভর্তির হার বাড়াতে এবং শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার কমাতে বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জাতির পিতার শিক্ষা দর্শনের আরেকটি ভিত্তি হলো “মানসম্মত এবং প্রাসঙ্গিক শিক্ষা। যেখানে প্রবেশাধিকার ও অন্তর্ভুক্তি এবং সমতা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তার পাশাপাশি শিক্ষার মানের গুরুত্বের ওপরও তিনি বিশেষভাবে জোর দেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে শিক্ষা দেশ ও জনগণের প্রয়োজনের সাথে প্রাসঙ্গিক হওয়া উচিত। এই জাতীয় মানসম্মত শিক্ষাপদ্ধতি প্রথাগত একাডেমিক বিষয়গুলোর পাশাপাশি ব্যবহারিক এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা অন্তর্ভুক্ত করার জন্য পাঠ্যক্রমের সংস্কারের প্রচেষ্টার দিকে পরিচালিত করে। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং উদ্ভাবনকে চালিত করতে সক্ষম একটি কর্মী বাহিনী তৈরি করার জন্য মানসম্মত এবং প্রাসঙ্গিক শিক্ষার বিকল্প নেই। আর শিক্ষাকে উন্নতমানের করতে হলে পাঠ্যক্রম উন্নয়ন অত্যাবশ্যক। পাঠ্যক্রমের উন্নয়নে শেখ মুজিবুর রহমানের বিশেষ মনোযোগের কারণ ছিল শিক্ষাকে বাস্তব-বিশ্বের পরিস্থিতিতে আরো প্রযোজ্য করে তোলা। একটি আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা। তিনি বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ এবং কারিগরি শিক্ষার অন্তর্ভুক্তির পক্ষেও কথা বলেন যাতে শিক্ষার্থীদেরকে এমন দক্ষতায় সজ্জিত করা যায় যা তাদেরকে কর্মসংস্থানযোগ্য করে তুলবে। তার মতে জাতির উন্নয়নে শিক্ষার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। তিনি শিক্ষাকে আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনের অনুঘটক হিসেবে দেখেছিলেন এবং বিশ্বাস করতেন যে একটি সমৃদ্ধ জাতি গঠনের জন্য একটি শিক্ষিত জনসংখ্যা অপরিহার্য। শিক্ষা, তার দৃষ্টিতে, কেবল একটি ব্যক্তিগত সম্পদ নয় বরং একটি সম্মিলিত সম্পদ যা জাতীয় অগ্রগতিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারে। “মানব সম্পদ উন্নয়নে” তাই শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। একটি দক্ষ ও জ্ঞানী জনশক্তি গড়ে তোলাই ছিল এর লক্ষ্য।
তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতির জন্য মানবসম্পদ উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই শিক্ষায় বিনিয়োগগুলোকে দেশের ভবিষ্যতের বিনিয়োগ হিসাবে দেখেছিলেন। সমগ্র সম্প্রদায়কে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনার জন্য এবং সত্যিকারের ন্যায়সঙ্গত সমাজ গঠনের সম্ভাবনাকে তিনি শিক্ষায় দেখেছিলেন। তাছাড়া আরো বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে শিক্ষাকে অনুঘটক হিসেবে দেখেছিলেন। যেমন “সাংস্কৃতিক ও নৈতিক মূল্যবোধ” তৈরিতে, “সাংস্কৃতিক সংরক্ষণ এবং নৈতিক শিক্ষা” প্রদানে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উপরও সমানভাবে জোর দিয়েছিলেন। জাতির পিতার মতে শিক্ষা হলো সাংস্কৃতিক ও নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রত করার একটি মাধ্যম। তিনি বিশ্বাস করতেন যে বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষা করা জাতির পরিচয় ও সংহতির জন্য অপরিহার্য। আর এই কারণেই পাঠ্যসূচিতে বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও ইতিহাসের ওপর জোর দেওয়া হয়েছিল। এর একটি বিশেষ কারণও ছিল। সাংস্কৃতিক পরিচয়কে শক্তিশালী করা এবং শিক্ষার্থীরা যেন তাদের ঐতিহ্য সম্পর্কে সচেতন হয়। উপরন্তু, সততা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার মতো মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলার জন্য নৈতিক শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল, যা একটি ন্যায় ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাজের বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়েছিল।
আধুনিক বিশ্বে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গুরুত্ব অনুধাবন করে মুজিব শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে এই ক্ষেত্রগুলোর বিশেষভাবে জোর দিয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে বৈশ্বিক মঞ্চে দেশের উন্নয়ন এবং প্রতিযোগিতা সক্ষমতার জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতি অপরিহার্য। এখন প্রশ্ন হলো আমরা কি পেরেছি বঙ্গবন্ধুর শিক্ষার নান্দনিক ভাবনা ও মূল্যবোধের দার্শনিক বিষয়গুলোকে বাস্তবায়ন করতে? বর্তমানে শিক্ষার হাল-হকিকত দেখে সম্ভবত অজ্ঞান ব্যক্তিও এর একটা কায়দামাফিক জবাব দিতে পারবেন।
লেখক: শিক্ষক, গবেষক এবং কলামিস্ট
মানবকণ্ঠ/এসআরএস
Comments