Image description

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিতে কোনো দুষ্কৃতিকারীর ঠাঁই হবে না। জনগণের সাথে সম্পর্কোন্নয়নের মাধ্যমে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে।’

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে ধারাবাহিক মতবিনিময়ের প্রথম দিনে রংপুর বিভাগের জেলাগুলোর নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময়কালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি এ আহ্বান জানান বিএনপির এই শীর্ষ নেতা।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন। জনগণকে সাথে নিয়ে দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাওয়ার নির্দেশনা প্রদান করেন।

এসময় তিনি বলেন, ‘দলের নাম ভাঙিয়ে কিছু দুষ্কৃতিকারী দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টায় লিপ্ত, কিন্তু বিএনপিতে কোন দুষ্কৃতিকারীর ঠাঁই নাই।’

বিবৃতিতে গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবসে তারেক রহমান বলেন, ‘আমার দলের পক্ষ থেকে আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, বিএনপি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করলে বাংলাদেশে আর কোনো ব্যক্তি যেন গুম না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে আমরা জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত গুম প্রতিরোধ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনভেনশন (আইসিপিপিইডি) অনুসারে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করব, ইনশাআল্লাহ। মানবতার বিরুদ্ধে এই গুরুতর অপরাধের ন্যায় বিচার হতেই হবে।’ 

তারেক রহমান বলেন, গুম মানবতাবিরোধী অপরাধ, যা মৌলিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। বাংলাদেশে নজিরবিহীন গুমের ঘটনায় লাখ-লাখ দেশবাসীর মতো আমিও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে এটি প্রয়োগ করা হয়। শেখ হাসিনার দুঃশাসনে গুমকে ব্যবহার করা হয়েছে জনসমাজে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য। নির্ভরযোগ্য মানবাধিকার সংস্থাগুলো একযোগে প্রকাশ করেছে যে, ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ৭ শতাধিক মানুষকে বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো গুম করেছে। এটি অত্যন্ত পীড়াদায়ক, আজ পর্যন্ত একটি ঘটনারও ন্যায়বিচার পাওয়া যায়নি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘এই নিখোঁজ মানুষগুলো ছিলেন তাদের পরিবারের প্রাণপ্রিয় সদস্য। তাদের স্বপ্ন, ভালোবাসা ও সুন্দর ভবিষ্যৎ ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। অদৃশ্য মানুষগুলো কোথায় আছে আমরা জানি না, তবে রেখে গিয়েছে মর্মান্তিক ও বেদনাবিধুর বাংলাদেশ, যেখানে আমাদের অর্জিত মানবাধিকার ও মূল্যবোধ লুণ্ঠিত হয়েছে। গুম আন্তর্জাতিক অপরাধ হিসেবে স্বীকৃত। আইসিসি এর রোম সনদের ৭ (২) অনুচ্ছেদে গুমকে মানবতার বিরুদ্ধে একটি অপরাধ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, আর মানবাধিকারের এই লঙ্ঘনের জন্য ন্যায়বিচারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর আরোপ করা হয়েছে।’ 

তারেক রহমান বলেন, ‘গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা রাজনৈতিক দর্শন, জাতি, ভাষা, নৃ-গোষ্ঠী, সংস্কৃতি, বর্ণ ইত্যাদিসহ রাষ্ট্রীয় সীমানাকে অতিক্রম করে গুম হওয়া মানুষগুলোর স্মরণে এবং সেইসঙ্গে তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানোর জন্য দিবসটি পালন করি। আমি এই মনুষ্যত্বহীন অপরাধে জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতার জন্য দুনিয়া জুড়ে ঐক্য ও সংহতির আহ্বান জানাই।’

মানবকণ্ঠ/এসআরএস