Image description

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গত ৫ আগস্ট ভারতে চলে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন সেনাবাহিনী প্রধান গণমাধ্যমকে বলেছেন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন। দীর্ঘ ছয় সপ্তাহ পর সামনে এলো সেই পদত্যাগপত্র। যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়া পদত্যাগপত্রটি ভুয়া দাবি করে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগ।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি এম. নজরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এর প্রতিবাদ জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে নেতৃত্বদ্বয় বলেন, 'বাংলাদেশে পাকিস্তান সমর্থিত সাম্প্রদায়িক অপশক্তির অবৈধ সরকার বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন এই মর্মে একটি ভুয়া পদত্যাগ পত্র দেশের টিভি চ্যানেলসহ বিভিন্ন মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তারা বলেন, সংবিধান অনুযায়ী পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি বরাবর প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে লিখে দিতে হবে। টাইপ করে নয়। এই ভুয়া পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর কপি পেস্ট করা হয়েছে। শেখ হাসিনা যেদিন দেশ ছেড়ে আসেন, সেদিন ছিল ০৫ আগস্ট। বাংলা সন অনুযায়ী ২১ শ্রাবণ। কিন্তু তারা লিখেছে, ২০ শ্রাবণ। এছাড়া সরকারি চিঠিতে বাংলা তারিখ আগে বসানো হয়। এই চিঠিতে সেটা নিচে বসানো। পরীক্ষা করলেই আসল সত্যটা বেরিয়ে আসবে। এই ভুয়া পদত্যাগপত্র প্রকাশের মধ্য দিয়ে সরকার সাইবার ক্রাইম করেছে। এই মিথ্যাচারী তাবেদাররা লেটার প্যাডে ভুলে মুজিববর্ষ লোগো লাগিয়ে রেখেছে, এই মুজিব বর্ষ ২০২১ সালে শেষ! ভুয়া এই পদত্যাগপত্রটি অত্যন্ত অস্পষ্ট।

পদত্যাগ পত্রে উল্লেখ্য করা হয়, শেখ হাসিনা নাকি সব কিছুর দায় নিচ্ছে আর ভুল স্বীকার করছে। অর্থাৎ যা মন চায় তা লিখে প্রকাশ করে দেওয়া হয়েছে।  দেশের মিডিয়াকে নগ্নভাবে ব্যবহার করছে চেপে বসা অবৈধ সরকার।'

তারা বলেন, 'সাম্প্রদায়িক শক্তি জামায়াত-শিবির-বিএনপি সারা দেশে হত্যা, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, লুটতরাজ, মন্দির-গির্জা ভাংচুর, সংখ্যালঘুদেরকে হত্যা, পুলিশ-আনসার হত্যা, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যা, সংসদ ভবন, গণভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস, বিটিভিসহ সরকারী-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা করে ব্যাপক ক্ষতি সাধনের মধ্য দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করে নির্বাচিত সরকার প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনাকে জোর করে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করে।' 

এম. নজরুল ইসলাম ও মজিবুর রহমান আরো বলেন, 'সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি। তিনি দেশ ত্যাগের পর রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারীরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত ধানমন্ডির ৩২ নম্বর ঐতিহাসিক বাড়িটি পুড়িয়ে দেয়। জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে কয়েক শ মিথ্যা মামলা, সংখ্যালঘু ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের নির্যাতন, হত্যা, নৈরাজ্য, মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলছে। দেশে দ্রব্যমূল্য বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষের জানমালের কোনো নিরাপত্তা নেই। এই অবস্থায় চেপে বসা অবৈধ তাবেদার ইউনূস সরকারের ওপর মানুষ ভীষণভাবে বিরক্ত ও ক্ষিপ্ত।' 

তারা বলেন, 'এরই মধ্যে দেশের মানুষ তাঁদের প্রিয় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে পেতে আওয়াজ তুলতে শুরু করেছে। এসব দেখে অপশক্তির অবৈধ সরকার এখন দিশেহারা হয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার নামে মিথ্যার বেসাতি করছে। তারই অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে ভুয়া পদত্যাগ পত্র বানিয়ে তা প্রচার করছে। 

আমরা এই জঘন্য মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেই সঙ্গে অবৈধ সরকারকে বলছি, মিথ্যা আর গুজব ছড়িয়ে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারবেন না।'

মানবকণ্ঠ/এসআরএস