রাজধানীর বিজয়নগরে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে চারতলা ভবনটির নিচতলা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (১ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ভবনটিতে গিয়ে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির এ অবস্থা দেখা যায়।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক ও জনতা’র ব্যানারে একদল লোক একটি মিছিল নিয়ে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে যান। সেখানে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এরপর তাঁদের সঙ্গে জাতীয় পার্টির কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে ওই কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়।
আজ শুক্রবার দেখা যায়, হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া ভবনটি খালি পড়ে আছে। পুরো ভবনটি দেখতে এসেছেন কিছু নেতা-কর্মী। তবে কার্যালয়ের সামনে পুলিশ ও অন্য কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দেখা যায়নি।
ভবনটি দেখতে আসা নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা হলো। তাঁদের অনেকেরই জিজ্ঞাসা, দেশে কি প্রশাসন নেই, এভাবে কার্যালয়টি পুড়িয়ে দেওয়া হলো। কোনো বাধা দেওয়া হলো না।
এসব কর্মীর নাম জিজ্ঞাসা করলেও তাঁরা বলতে চাননি।
আগুনে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের নিচতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কার্যালয়ের দেয়ালে থাকা জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ম্যুরাল ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক দোকানদার বলেন, কয়েক দিন ধরে এখানে লোকজনের ভিড় ছিল। গতকাল ভবনটিতে আগুন দেওয়া হয়েছে।
বৃস্পতিবার সন্ধ্যায় বিজয়নগরে মিছিলটি যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক ও জনতার ব্যানারে ‘পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক অপতৎপরতা ও দেশবিরোধী চক্রান্তের প্রতিবাদে’ মশালমিছিল কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলেন গণ অধিকার পরিষদের ছাত্রসংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা।
ঘটনা সম্পর্কে নুরুল হকের নেতৃত্বাধীন গণ অধিকার পরিষদের নেতা হাসান আল মামুন গতকাল রাতে ঘটনাস্থলে বলেন, ‘শাহবাগে সমাবেশ শেষ করে আমরা বিজয়নগরে আসি। জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা আমাদের ওপর অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ সন্ধ্যা সাতটার দিকে ফেসবুকে একটি পোস্টে বলেন, ‘জাতীয় বেইমান এই জাতীয় পার্টি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিজয়নগরে আমাদের ভাইদের পিটিয়েছে, অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। এবার এই জাতীয় বেইমানদের উৎখাত নিশ্চিত।’ এর কিছুক্ষণ পর হাসনাত আবদুল্লাহ আরেকটি পোস্টে লেখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে রাত সাড়ে আটটায় মিছিল নিয়ে তাঁরা বিজয়নগরে যাবেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক নেতা সারজিস আলম সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ফেসবুকে একই রকম একটি পোস্ট দেন। তিনি লিখেছেন, ‘রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল নিয়ে আমরা বিজয়নগরে যাচ্ছি।’ পরে রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি মিছিল বিজয়নগরের উদ্দেশে বের হয়।
মাণববকন্ঠ/আরআই
Comments