Image description

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ‘গত জুলাইয়ে সংঘটিত আন্দোলন আসলে কোটা সংস্কারের আন্দোলনের আড়ালে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নস্যাৎ এবং বাংলাদেশকে ধ্বংসের নীলনকশা। যা আন্দোলনকারী নেতাদের কথা এবং বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণের মধ্য দিয়ে দিনকে দিন স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হচ্ছে। গভীর ষড়যন্ত্র থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) ফেসবুকে আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড পেজে আপলোড করা এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন তিনি।

জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, একজন সমন্বয়ক অকপটে স্বীকার করলো, ‘যদি মেট্রোরেলে আগুন দেওয়া না হতো, পুলিশ মারা না হতো, তাহলে এত সহজে বিপ্লব অর্জিত হতো না।’ তাদের তথাকথিত বিপ্লব ছিল একটি নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা। তাদের তথাকথিত বিপ্লব দেশের মানুষের জীবনে ইতিবাচক কোনও পরিবর্তন আনতে পারেনি, বরং সবদিক থেকে দুর্বিষহ করে তুলেছে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা তখনই বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও অর্জনকে ধ্বংসের জন্য দেশবিরোধী চক্র বিভিন্ন সন্ত্রাসী ও উগ্র জঙ্গিবাদী সংগঠনের সঙ্গে আঁতাত করে এটা করছে।’

নানক বলেন, সমন্বয়কদের মধ্যে যারা বর্তমান অবৈধ ও অসাংবিধানিক সরকারের উপদেষ্টা হয়েছে তারা বলেছে যে, তারা সশস্ত্র আন্দোলনের ডাক দিতো। এ থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী ও উগ্র জঙ্গিবাদী সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে তারা মাঠে নেমেছিল, তাদের অস্ত্রের মজুত ছিল এবং তা দিয়ে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে। সরকারের একজন উপদেষ্টার বক্তব্যে এটা ইতোমধ্যে প্রমাণিতও হয়েছে। তিনি বলেছিলেন, ‘আহতদের শরীরে ৭.৬২ বুলেটের চিহ্ন, যা আমাদের পুলিশ বাহিনীসহ অন্য কোনও বাহিনীর সদস্যরা ব্যবহার করে না।’ ক্ষমতা দখলের জন্য তারা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে অগ্নিসংযোগ  করেছে, হাজার হাজার পুলিশ হত্যা করেছে এবং থানা লুট করে পুলিশের অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়েছে। লুট করা সেসব অস্ত্র কোথায়? সরকার সেগুলো উদ্ধারে কোনও তৎপরতা দেখাচ্ছে না কেন? কারণ সেগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করলে আরও অনেক গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যাবে। সেগুলো সন্ত্রাসী জঙ্গি সংগঠনের হাতে চলে গেছে এবং তা ব্যবহার করে ডাকাতি করা হচ্ছে। তথাকথিত এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে উগ্র জঙ্গিবাদী সন্ত্রাসীরা পুনরায় প্রকাশ্যে আসছে এবং সরকার তাদের সঙ্গে আপস করছে। ফলে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, কোটা সংস্কারের আন্দোলন কী সশস্ত্র যুদ্ধ হতে পারে? একটি স্বাধীন দেশে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধের ঘোষণা দেওয়া তো কোনও আন্দোলনের উদ্দেশ্য হতে পারে না। তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন ছিল। শেখ হাসিনা তাদের হীন ও ঘৃণ্য উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে বলেছিলেন যে, তিনি কোনও হতাহত চাননি এবং তিনি লাশের উপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় থাকতে চাননি। এখন ষড়যন্ত্রকারীদের সুগভীর পরিকল্পনা একের পর এক ফাঁস হচ্ছে।

জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনিদের মতো তারাও সব স্বীকার করে নিচ্ছে। সময়ের পরিক্রমায় এই ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত ইতিহাসের ঘৃণিত অধ্যায়ে পরিণত হবে। সর্বোপরি, আমরা এটার বিচারের দায়ভার দেশের জনগণের উপর ছেড়ে দিলাম। আওয়ামী লীগ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সাম্যের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। মহান মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সচেতন দেশবাসীর সোচ্চার হওয়ার কোনও বিকল্প নেই। গভীর ষড়যন্ত্র থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার অহ্বান জানাচ্ছি।

মানবকণ্ঠ/আরআই