আইসিটি মন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের বক্তব্য উদ্ধৃত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের চীফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যে বক্তব্য দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। রোববার (২২ ডিসেম্বর) এ উদ্বেগ জানানো হয়।
চীফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেছেন, জুলাই-আগস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়েছিল বলে তদন্ত সংস্থার কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। কোন বিচারাধীন বিষয়ে গণমাধ্যমের সামনে চীফ প্রসিকিউটরের এ ধরনের মিথ্যা বক্তব্য সংবিধান ও আইনের লঙ্ঘন। এটি ন্যায় বিচারের নীতির পরিপন্থী। আমাদের আইনি ব্যবস্থায় পাবলিক প্রসিকিউটর কোন দলীয় পদ নয়। তিনি রাষ্ট্রের পক্ষে দায়িত্ব পালন করেন। তার বক্তব্য কোনো অবস্থায়ই দলীয় পক্ষপাতদুষ্টু হতে পারে না।
আওয়ামী লীগ মনে করে, এটি জাতির কাছে অজানা নয় যে, অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত চিহ্নিত ও কুখ্যাত অপরাধীদের আইনজীবী ছিলেন। এই ধরনের একজন ব্যক্তিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চীফ প্রসিকিউটর নিয়োগ করা এদেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রত্যাশী প্রতিটি মানুষের সাথে নির্মম তামাশা করার শামিল।
অন্যদিকে, আন্দোলনের আড়ালে মেটিক্যুলাস ডিজাইনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থী হত্যা, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায় ফ্যাসিস্ট ইউনূসের নেতৃত্বে ষড়যন্ত্রকারী গ্রুপ। এদের অনেকেই আত্মস্বীকারীক্তি দিয়েছে। আবার অনেক শিক্ষার্থী এসব সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে। এসব ষড়যন্ত্রকারীরা পুলিশ বাহিনীর হাজার হাজার সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর নজিরবিহীন সন্ত্রাস হামলা চালানো হয়। হাজার হাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালায়। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ অন্যান্য সম্প্রদায় ও জাতিগোষ্ঠীর মানুষের উপর ন্যাক্কারজনকভাবে আক্রমণ করা হয়। নির্বিচারে হত্যা করা হয়। যা গণহত্যার শামিল। এছাড়াও প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে। যত্রতত্র পড়ে থাকে মানুষের মরদেহ। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই হয়ে গেছে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। সরকার সচেতনভাবেই এগুলোর সমাধান করছে না এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল করছে না। এই অবৈধ দখলদার গোষ্ঠীর এসব অপকর্মের বিচার বাংলার মাটিতে হবে।
আওয়ামী লীগ আরো মনে করে, চীফ প্রসিকিউটরের সংবিধান, আইন ও ন্যায় বিচারের নীতি পরিপন্থী এই ধরনের নগ্ন অবস্থান দেশে-বিদেশে এটি পরিষ্কারভাবে খোলাসা করে দিচ্ছে যে, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী অসাংবিধানিক ও বেআইনি তথাকথিত অন্তর্বর্তী সরকার ক্যাঙ্গারু আদালতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সহ অসংখ্য মানুষকে প্রহসনমূলক বিচারের মাধ্যমে ঘায়েল করতে চায়। আমরা মনে করি, দেশের জনগণ ও বিশ্ববিবেক এই অপশক্তির ষড়যন্ত্র ও নীলনকশা সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। ইতিহাস সাক্ষী দেয়, দেশবিরোধী এ ধরনের ষড়যন্ত্র, নিষ্পেষণ ও প্রহসনমূলক বিচার কখনও সফল হয়নি। এবারও সফল হবে না ইনশাল্লাহ। বাংলাদেশের জনগণ আবার ঘুরে দাঁড়াবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
Comments