Image description

দেশে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু বলে কিছু নেই উল্লেখ করে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, সবাই সাংবিধানিকভাবে সমান। ধর্ম-বর্ণ মিলেমিশে আমরা বসবাস করি। আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতা যার যার ধর্ম করবে। কেউ যদি আপনাদের সংখ্যালঘু বলে, চিৎকার করে বলবেন, আমরা রাষ্ট্রের নাগরিক, সবার অধিকার সমান।

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) যশোর ঈদগাহ ময়দানে জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। 

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এদেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার কেড়ে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। তারাই সবচেয়ে বেশি নির্যাতন করেছে। ২০১৩ সালে জাতিসংঘে চিঠি লিখে নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছিলাম। এখনও বলছি তদন্ত করুন। দোষী প্রমাণিত হলে নিজের বিচার দাবি করছি।

তিনি বলেন, চাঁদাবাজ ও দুঃশাসন মুক্ত দেশ গড়তে জনগণ জামায়াতের দিকে তাকিয়ে আছে। ক্ষমতা নয়, সুশাসনের জন্য দেশবাসীর ভালোবাসা ও সমর্থন চাই। আমরা ন্যায় ও ইনসাফের বাংলাদেশ গড়তে চাই।

তিনি আরো বলেন, জামায়াত ইসলামী দেশবাসীকে সেবার সুযোগ পেলে এদেশে চাঁদাবাজির অস্তিত্ব থাকবে না, দখলদারের অস্তিত্ব থাকবে না, ঘুস থাকবে না।  

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা যাদেরকে চোর-ডাকাত হিসেবে চিনি, তাদের সক্ষমতা কতটুকু? কিন্তু কলমের খোঁচায় যারা হাজার হাজার কোটি টাকা ডাকাতি করেছে, তারা বড় চোর-ডাকাত। আওয়ামী লীগ ও তার দোসরা ডাকাতি করে ব্যাংকগুলোকে ফোকলা করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলো ব্যবসায়ীদের পুঁজি দিতে পারছে না। অন্তর্বর্তী সরকার অর্থনীতিকে সচল করার চেষ্টা করছে। আমরা চাই অর্থনীতি আরো গতিশীল হোক। বাজারে সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার আরও উদ্যোগী হোক।

তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। জামায়াত এমন শিক্ষা চায় যেখানে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া শেষ করে শুধু সার্টিফিকেট নয়, একটা চাকরি নিয়ে বের হবে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষে আর কত চেতনা বিক্রি করবেন আপনারা। ৫৩ বছর জাতিকে দাসে পরিণত করেছেন। আমরা আর কারো দাসে পরিণত হবো না। আওয়ামী লীগ শোষণ করতে গিয়ে দেশে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে। একটা গোষ্ঠীর কাছে সমস্ত বাংলাদেশের রিজিক হাইজ্যাক হয়ে গিয়েছিল। জাতীয় স্বার্থে আর কোনো ছাড় দেয়া হবে না।

মিথ্যা মামলায় নিরীহ মানুষকে হয়রানি প্রসঙ্গে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, মিথ্যা মামলায় নিরীহ, নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি বন্ধ করতে হবে। হত্যা মামলায় ৪০০ থেকে ৫০০ মানুষকে আসামি করা হচ্ছে। একজন মানুষ হত্যায় এই লোক কীভাবে জড়িত থাকে? প্রকৃত অপরাধীকে আসামি করুন। মামলা করে অর্থবাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। 

নারীর অধিকার নিশ্চিতের কথা তুলে ধরে জামায়াতের আমীর বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে নারীর অধিকার নিয়ে মিথ্যাচার করা হয়। আমরা নাকি নারীদের বন্দি করে রাখবো। আমরা বলতে চাই, জামায়াত ইসলাম নারীদের মায়ের জাতি হিসেবেই দেখতে চাই। তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী মূল্যায়ন করা হবে। তাদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

যশোর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসুলের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে বক্তব্যে রাখেন- জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন, মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, মাওলানা আজিজুর রহমান, ঝিনাইদহ জেলা আমির অধ্যাপক আলী আযম, সাতক্ষীরা জেলা আমির শহিদুল ইসলাম মুকুল, মাগুরা জেলা আমির এম বি বাকের, নড়াইল জেলা আমির আতাউর রহমান বাচ্চু, শহিদ আবদুল্লাহর বাবা আবদুল জব্বার, যশোর জেলা নায়েবে আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, যশোর পূর্ব জেলার সাবেক ভারপ্রাপ্ত আমির মাওলানা আবদুল আজিজ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আবদুল মান্নান, যশোর জেলা কর্মপরিষদ সদস্য গাজি এনামুল হক, তৌহিদ হোসেন, ব্যবসায়ী আবদুল কাদের প্রমুখ।

মানবকণ্ঠ/আরএইচটি