জামায়াতে ইসলামের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে সবকিছু সংস্কার করা সম্ভব নয়।কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ন্যূনতম যেসব সংস্কার প্রয়োজন, সেগুলো শেষ করতে সুযোগ দিতে হবে।’
শুক্রবার রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজের (এফবিএস) জাতীয় সংলাপের প্রথম অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন। ‘ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন’ শীর্ষক এ সংলাপে ‘ঐক্য কোন পথে’ অধিবেশনে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ছাড়াও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা এবং নাগরিক সমাজের নেতৃত্বস্থানীয়রা বক্তৃতা করেন।
ন্যূনতম সংস্কার করে জামায়াত নির্বাচন চায় জানিয়ে গোলাম পরওয়ার বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন তা করতে হবে। তারপরই অবাধ, নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব। জামায়াত সংস্কারের জন্য সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে প্রস্তুত।
‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত গড়তে হবে’
জাতীয় সংলাপে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, নতুন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক বন্দোবস্ত গড়তে হবে। ছাত্র-জনতার রক্তই সেই সুযোগ এনে দিয়েছে। আজ রাজনৈতিক দলগুলোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রশ্ন– রাজনীতি চর্চায় সেই পুরোনো জায়গায় ফিরে যাবো কিনা। বাংলাদেশের ক্ষমতা কোন পথে যাবে– তা ঠিক করতে হবে। সেই জায়গায় ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার বিষয়ে ঐকমত্যে আসতে হবে।
‘দলগুলো প্রতিশ্রুতি ভুলে যায়’
সংলাপে গণঅধিকার পরিষদ সভাপতি নুরুল হক নুর অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় গিয়ে প্রতিশ্রুতি ভুলে যায় বলেই এখনও বিশেষ ক্ষমতা আইন রয়েছে। বিএনপির সমমনা দলগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর অনেক দলই সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন নিয়ে অবস্থান বদলে ফেলেছে। তারা সভায় এক রকম বলেন, ভেতরে অন্যরকম। প্রশাসনের সবাই বিএনপি-জামায়াত হয়ে যাচ্ছে। কীভাবে জবাবদিহি হবে?
আমলাতন্ত্রের সমালোচনা
আমলাতন্ত্রের সমালোচনা করে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক মুহাম্মদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, অভ্যুত্থানের সময় সামরিক কর্মকর্তারা পাশে দাঁড়ালেও সচিবালয় থেকে কেউ বলেনি, ‘মানুষের পাশে আছি।’ নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের দিকে এগোনোর কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এতে সুবিধাবাদের এবং ওয়ান-ইলেভেনের জায়গা হবে না। দুই দলের বন্দোবস্তের জায়গা হবে না। এমন বাংলাদেশ চাই, যেখানে পদলেহনকারী সচিব থাকবেন না।
জেএসডির সিনিয়র সহসভাপতি তানিয়া রব বলেছেন, অভ্যুত্থানে তরুণরা শুধু নির্বাচনের জন্য প্রাণ দেয়নি। ৫ আগস্টের পর দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি। দখলদারিত্ব শুধু হাতবদল হয়েছে।
পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেছেন, সচিবালয়ে আগুন এবং সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা একই ষড়যন্ত্র। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলাকে অতিরঞ্জিত করা, আবার অস্বীকার করাও বিপজ্জনক।
ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই নেতা ফজলুল হক বলেছেন, অর্থনৈতিক সংস্কার গুরুত্ব পাচ্ছে না। তুলনামূলক সৎ ব্যবসায়ীদের ঐক্যবদ্ধ না করতে না পারলে হোঁচট খেতে হবে।
মানবকণ্ঠ/আরআই
Comments