Image description

গণঅধিকার পরিষদ নেতা ফারুক হাসানের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার ২ আসামি জামিন পাওয়ায় নিন্দা জানিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। তিনি বলেন, জামিন অযোগ্য মামলায় আসামিদের জামিনে প্রমাণিত হলো, হামলায় রাঘববোয়ালদের সংশ্লিষ্টতা বা ইন্ধন ছিল। তারা আসামিদের জামিন করাতে বিচার বিভাগের উপর হস্তক্ষেপ করেছে।  

সোমবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আহত ফারুক হাসানকে দেখতে গিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন তিনি। 

মো. রাশেদ খান বলেন, কেন এই হামলা? এই হামলার ইন্ধনদাতা কারা? শোনা যাচ্ছে, রাঘববোয়ালরা আসামিদের জামিন করাতে বিচার বিভাগের উপর হস্তক্ষেপ করবে। তাই যদি হয়, তবে কিসের রাষ্ট্র সংস্কার, কিসের বিচারবিভাগের স্বাধীনতা? আমাদের স্পষ্ট কথা, দোষীদের ছাড় দেওয়া চলবেনা। গণঅভ্যুত্থানে দুই শ্রেণীর মানুষ আহত হয়েছে। আন্দোলনের পক্ষে এবং আন্দোলন প্রতিরোধ করতে গিয়ে। 

তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধের শক্তি এখন আহতলীগে পরিণত হয়েছে। এরা কখনো স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে জিম্মি করছে, কখনো আহতলীগের মধ্য থেকে উপদেষ্টা দাবি করছে, কখনো সড়ক অবরোধ করছে। প্রকৃত আহতরা হাসপাতালের বিছানায়। আর অপরাধীরা বিভিন্ন জায়গা কুকর্ম করছে। যারা ফারুক হাসানের উপর হামলা করেছে এরা হাসিনার প্রেতাত্মা। এদের কোনো ছাড় নেই ক্ষমা নেই। যদি এরা জামিন পায়, তবে ধরে নিবো, এটা কোন ছোটখাটো বিষয় না। 

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বড় উদ্দেশ্য নিয়ে ফারুক হাসানের উপর হামলা করা হয়েছে। কেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না, কিভাবে ওবায়দুল কাদের পালিয়ে গেলো? শেখ পরিবারের একজনও কেন আটক হলো না? এখনো শহিদ পরিবার ক্ষতিপূরণ পেলো না, শহিদের তালিকা হলো না, কেন আহতরা সুচিকিৎসা পাচ্ছে না। এই কথা বললে আজকাল মার খেতে হচ্ছে। ২০২৪ এর কোন যোদ্ধা অপরাধ করলেই কি ক্ষমা পাবে?  তাহলে তো মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ওবায়দুল নিষ্পাপ! 

সংবাদ সম্মেলন শেষে হতেই শোনা যায়, অপরাধীরা গ্রেফতারের ১১ ঘণ্টার মাথায় জামিন পেয়েছে। পরবর্তীতে অন্যান্য সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে রাশেদ খাঁন বলেন, ফারুকের উপর হামলার মামলায় গ্রেফতার আসামিরা জামিন পেয়েছে। অথচ ফারুক এখন হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে।  ৩৭৯, ৩২৬, ৩০৭ জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা হলেও বিচারবিভাগের উপর প্রভাব খাটিয়েছে জামিন নিয়েছে। এখন প্রমাণিত হলো হামলায় রাঘববোয়ালদের সংশ্লিষ্টতা ও ইন্ধন ছিল। বিচারবিভাগ স্বাধীন হবে, এই রাষ্ট্রের পরিবর্তন এই সরকার করবে, এটা আমি আর বিশ্বাস করি না। রাষ্ট্র সংস্কারের নামে ক্ষমতার চেয়ারের স্বাদ নেওয়ার সময়সীমা এরা দীর্ঘায়িত করবে। এর বাইরে আর কোনোকিছু করতে পারবেনা।

গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আমার উপরে যারা শহিদ মিনারে হামলা চালিয়েছে তারা কেউই আহত নন কিংবা শিক্ষার্থী নন, তারা পরিষ্কারভাবে সন্ত্রাসী। সরকার এই সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতেও গড়িমসি করছে। এতেই বুঝা যাচ্ছে যে এই হামলাকারীদের সাথে তাদের ভালো একটা কানেকশন আছে। তারা আমার কাছে লোক পাঠিয়েছিল আপস করার জন্য, কিন্তু আমি জানিয়েছি ভুলের ক্ষমা হয় অপরাধের কোন ক্ষমা হয়না। কিন্তু আমি হাসপাতালে বিছানায় কাতরাচ্ছি, এই অবস্থায় তারা জামিন পেয়ে গেলো? এই কি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, বিচারবিভাগের স্বাধীনতা? এই রাষ্ট্রের আদৌও সংস্কার হবে? 

গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন বলেন, ফারুক হাসানের উপর হামলা এবং হামলাকারীদের জামিনের মধ্যে দিয়ে এটাই প্রমাণিত হয় বিচার বিভাগ এখনো স্বাধীন হয়নি। প্রকাশ্যে দিবালোকে শহিদ মিনারে ফারুক হাসানের উপর হামলা হয়েছে সেই হামলার ভিডিও থাকার পরও আসামিদের জামিন দেয়া হয়েছে। এই অবস্থা ছিল আওয়ামী লীগ শাসনামলে তাহলে আর কিসের সংস্কার হলো জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে? 

আমাদের রক্তের মধ্যে দিয়ে আজকের এই জুলাই আগস্টের বিপ্লব হয়েছে আর আজ আমাদের ফারুক হাসানের উপর হামলা! এটা কোনো ভাবেই গণঅধিকার পরিষদের নেতা কর্মীরা মেনে নিবে না। 

সংবাদ সম্মেলনের সময় গণঅভ্যুত্থানে আহত নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

মানবকণ্ঠ/এসআর