Image description

চিকিৎসার জন্য ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই লন্ডনে গিয়েছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এরপর আর কোনো বিদেশ সফর হয়নি। সামনা-সামনি দেখাও হয়নি মা-ছেলের। অবশেষে দীর্ঘ সাড়ে ৭ বছর পর সেই অপেক্ষার অবসান হলো; সরাসরি দেখা হলো মা ও ছেলের। মাকে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে বুকে জড়িয়ে ধরলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান; সেখানে সৃষ্টি হয় এক আবেকঘন পরিবেশের। জিয়া পরিবারের জন্য আজ অবিস্মরণীয়-অভাবনীয়-অনির্বচনীয় একটি দিন।

বাংলাদেশ সময় বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে খালেদা জিয়াকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছায়। বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান তার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান।

এছাড়া যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক ও সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমদসহ অনেক নেতাকর্মীরা বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে মঙ্গলবার রাত ১১টা ৪৬ মিনিটে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরের ভিআইপি টারমাক থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনকে বহনকারী উড়োজাহাজটি লন্ডনের উদ্দেশ্যে উড়াল দেয়। মাঝপথে কাতারের দোহায় বিরতি নেয় এই ‘বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স’।

তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। ২০১৮ সালে একটি দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর তার অসুস্থতা বাড়ে। এর মধ্যে কয়েকবার তিনি জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও পড়েন। এমন পরিস্থিতিতে দল ও পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে তার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়। সরকার তাতে সাড়া দেয়নি।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতির এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দী হয়েছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত।

২০২৩ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় আসা জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় হসপিটালের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার শরীরে রক্তনালিতে সফল অস্ত্রোপচার হয়।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার লিভার প্রতিস্থাপন খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। লিভার প্রতিস্থাপনের পর পুরো চিকিৎসায় দুই মাসের মতো লেগে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।