গুম-খুন-দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ছিলেন দলটির নেতারা। অব্যাহত ছিল নেতৃত্বের ভুল ও অহমিকা। ফলাফল জনরোষ। সবমিলিয়ে ভয়াবহ পতন ও লজ্জাজনকভাবে বিদায় নিতে হয়েছে টানা সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতার মসনদে থাকা আওয়ামী লীগ সরকারকে। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর কেন্দ্র থেকে, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড-ইউনিটের নেতারাও আত্মগোপনে। কার্যত বন্ধ সব অফিসিয়াল কার্যক্রম। তবে পাঁচ মাস আগে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানোর পর এখন ধীরে ধীরে ফের মাঠে ফেরার পথ খুঁজছে আওয়ামী লীগ।
দলটির নেতারা অজ্ঞাত স্থান থেকে জানিয়েছেন, তারা জনগণের সঙ্গেই থাকতে চান। দলের সব অন্তর্নিহিত শক্তিকে দেশের জন্য উৎসর্গ করতে চান। নতুন বছরে নিজেদের শুধরে জনগণের কাছে ফেরার পথ উন্মুক্ত করবেন। তারই অংশ হিসেবে বিদেশের মাটিতে সভা-সমাবেশসহ নানা কর্মসূচিতে সরব হচ্ছে দলটি। এসব সভা-সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হচ্ছেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। মাঠে ফিরতে কয়েকটি ধাপে কৌশলে এগোচ্ছে দলটি।
বর্তমানে দলটির কাছে গুরুত্বপূর্ণ ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করা। ফলে জুলাই-আগস্টে দলের অবস্থান নিয়ে নিজেদের ব্যাখ্যা স্পষ্ট করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। যেতে চাইছেন জনগণের কাছে। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রবিবার দক্ষিণ কোরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও জার্মানিতে আয়োজিত সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন শেখ হাসিনা। মোটাদাগে বর্তমানে চারটি বিষয় সামনে রেখে সামনে এগোতে চাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
বিদেশের পাশাপাশি দেশেও কর্মসূচি বাস্তবায়ন, মাঠের রাজনীতির বাস্তবতা মেনে নিয়ে অপেক্ষা করা, সরকার, বিএনপি ও নির্বাচন এই তিনটি বিষয়ে দলের কেন্দ্র থেকে ভারসাম্য বজায় রেখে চলা এবং ফের সাংগঠনিক কাঠামো গোছাতে মনোযোগ দেয়া। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে যোগাযোগ আগের চেয়ে বেড়েছে। আমাদের নেত্রী নিয়মিত ফোরামে যুক্ত হয়ে নির্দেশনা দিচ্ছেন। আমাদের দিক থেকেও মাঠ পর্যায়ে যোগাযোগ বাড়ানো হচ্ছে।
বিদেশ থেকেই সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা: ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বিদেশের মাটিতে বেশ কয়েকটি সভা-সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ। তারই মধ্যে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যেসব সভা-সমাবেশ করা হয়েছে, তাতে আওয়ামী লীগে সাবেক অনেক মন্ত্রী-এমপি উপস্থিত হয়ে
বক্তৃতা দিয়েছেন। একাধিক সভায় দলের সভাপতি শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। জার্মানিতে আয়োজিত এক সভায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ উপস্থিত হয়ে বক্তৃতা দেন। ইউরোপের পাশাপাশি যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী লীগ দলীয় কর্মসূচির আয়োজন করেছে। বিদেশের কমিটিগুলো আগের তুলনায় বর্তমানে অনেক সক্রিয়। কেউ কেউ আগামী ২০ জানুয়ারির অপেক্ষায় আছেন। কোনো কোনো নেতা মনে করছেন, টানা ক্ষমতায় থাকাকালে যেসব ভুল হয়েছে সেগুলো স্বীকার করে জনগণের কাছে যাওয়া দরকার। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের শীর্ষ এক নেতা বলেন, ‘কোনো শক্তি এসে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে, এটা আমরা বিশ্বাস করি না। এখনও দেশের ৫০ শতাংশ জনগণ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে। আমাদের কাজ তাদের কাছে যাওয়া। ভুল বোঝাবুঝি, মান-অভিমান দূর করা।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, আওয়ামী লীগ সবচেয়ে পুরনো দল, যার বয়স ৭৫ বছর, এবারের মতো বড়ো সংকটে আওয়ামী লীগ পড়েনি। তার মতে, দলটির বিরুদ্ধে শত শত মানুষ হত্যা, নেতাদের বিরুদ্ধে বেপরোয়া দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগের কারণে দেশের বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে আওয়ামী লীগের ব্যাপারে নেতিবাচক ধারণা থাকলেও সংগঠন হিসাবে আওয়ামী লীগ অনেক বড় এবং দেশের একটি অংশের মধ্যে শক্ত সমর্থন রয়েছে। ফলে হয়তো তারা ঘুরে দাঁড়াবে। তবে অনেক সময় লাগবে।
সাংগঠনিক কাঠামো গোছাতে মনোযোগ: পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কত নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়েছে তার সঠিক তথ্য নেই দলটির কাছে। আবার বেশির ভাগ কেন্দ্রীয় নেতা দেশ ছাড়া। দেশে যারা আছেন, তারাও আত্মগোপনে। তৃণমূল থেকেও ব্যক্তি-উদ্যোগে কিছু করা সম্ভব না। এ অবস্থায় সাংগঠনিক কাঠামো কীভাবে আবারও গোছানো যায় সেদিকে মনোযোগ দিচ্ছে দলটি। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সাংগঠনিক সম্পাদক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, একেবারে কোনো কিছুই দল থেকে করা হচ্ছে না- এমনটা ঠিক নয়। যেসব কর্মসূচি ছোট পরিসরে হচ্ছে সেগুলো খবরে আসছে না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মীরা ফের এক ছাতার নিচে সমবেত হতে সাংগঠনিক কাঠামো গোছাতে মনোযোগী হচ্ছে। তবে দলটির সাধারণ সম্পাদকসহ ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের অনুপস্থিতি কর্মী-সমর্থকদের হতাশ করেছে। সূত্র মতে, গত ৫ আগস্টের আগে থেকেই দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতি আর নেই। ওবায়দুল কাদের বর্তমানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান করছেন। তবে সেখানে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার যোগাযোগ নেই। কলকাতায় অন্য যে নেতারা আছেন, তারাও ওবায়দুল কাদেরের ওপর বিরক্ত। দলের পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদেরের কোনো বিবৃতিও পাওয়া যাচ্ছে না। দলের পক্ষে বেশিরভাগ বিবৃতি দিচ্ছেন কেন্দ্রের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। ভিডিও বার্তায় সামনে আসছেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।
দৃষ্টি সরকার, বিএনপি ও নির্বাচনের দিকে: বর্তমানে দেশের বাইরে আওয়ামী লীগ তৎপর থাকলেও দেশের মাটিতে দলের রাজনৈতিক অবস্থান মজবুত করতে সরকার, বিএনপি ও নির্বাচন এই তিন দিকে নজর রাখছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দ্রুত নির্বাচন চায় ক্ষমতা হারানো দলটি। তাই সরকার, বিএনপি ও নির্বাচন সম্পর্কে দৃষ্টি রাখছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। মূলত বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই সাংগঠনিকভাবে বিপর্যস্ত আওয়ামী লীগ। প্রকাশ্যে নেই নেতা-কর্মীরা, দলীয়ভাবে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি বা নির্দেশনাও নেই তৃণমূলে। এই অবস্থায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দলটির সব স্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে প্রথমবারের মতো ভার্চুয়াল মিটিংয়ে বসতে যাচ্ছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
উদ্দেশ্য- নেতাকর্মীদের সাংগঠনিকভাবে সক্রিয় করে তোলা। দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম বলছেন, অচিরেই দলের পক্ষ থেকে কর্মসূচি দেয়া হবে। ধাপে ধাপে কর্মসূচিতে হরতালের কথাও চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। দলের নেতাকর্মীরা কর্মসূচি চায়। তবে কী কর্মসূচি আসবে সেটা স্পষ্ট না করলেও তিনি জানিয়েছেন হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচির কথাও আলোচনা হয়েছে দলীয় ফোরামে। ‘ঘুরে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি আমাদের আছে। নেতাকর্মীরা কর্মসূচি চায়। অচিরেই আমাদের কর্মসূচি আসবে। তবে এটা আসবে ধাপে ধাপে। এভাবে শেষ পর্যন্ত হরতালের কর্মসূচিতেও যাওয়ার চিন্তুা-ভাবনা আছে আমাদের।
নির্দেশনার অপেক্ষায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা: আওয়ামী লীগের একটি জেলার ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা তোরাব আলী। এটি তার ছদ্মনাম। তিনি গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। বিশেষত রাতে বাসায় থাকেন না। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে তার সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানাচ্ছেন, দলের কোনো খোঁজখবরই তার কাছে নেই। ‘সবাইতো আছি দৌড়ের উপরে। দলের কাজ-কাম নিয়া আমাগো কোনো পরিকল্পনা নাই। নিউট্রাল অবস্থায় আছি। কারও সঙ্গেই যোগাযোগ হয় না আর কেউ নাইও।’ তৃণমূলের এই নেতা দলের নির্দেশনা নিয়ে অন্ধকারে আছেন। তবে তার চেয়ে বেশি ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন তার ভাষায় ‘নিজ দলের কিছু দুর্নীতিবাজ নেতাদের’ ওপর। বলছেন, খারাপ লোকদের দল থেকে ‘বের করতে হবে’। ‘যে নির্যাতন এখন আমরা হইতেছি, এটা নিয়া ভাই বহু দুঃখ মনের মধ্যে। অনেক সময় সারা দিন চোখের পানি ফেলি। মনে মনে ভাবি দুর্নীতিবাজ নেতা যারা অন্যায় করছে, তাগো জন্য এখন পলায়া থাকতে হয়, জেল খাটতে হয়, রাইতে বাগানে থাইকা মশার কামড় খাইতে হয়, মামলা খাইতে হয়। কিন্তু কেন আমি এসব ভোগ করুম?’ ‘যারা দুর্নীতি করছে, ওদের জন্য আমার অশান্তি। ওরা যদি দলের ভেতর থাকে, তাইলে আমরা আর এর মধ্যে মাথা ঘামামু না। দলের পরিশুদ্ধ করা লাগবো, ম্যান বদলানো লাগবো।’ এই ব্যক্তি এমনকি রাজনীতি ছেড়ে দেয়ার কথাও ভাবছেন। তবে সবাই যে এমন অবস্থায় আছেন তা নয়।
ক্ষোভ থাকলেও সাংগঠনিক নির্দেশনার অপেক্ষাতেও আছেন অনেকে। তাদেরই একজন আওয়ামী লীগের একটি অঙ্গ সংগঠনের নেতা এরশাদুল বারী (ছদ্মনাম)। ‘উনারা (দলের শীর্ষ নেতারা) যে আমাদের কোনো দিক-নির্দেশনা না দিয়ে চলে গেলো এবং এর পরে প্রায় চার/পাঁচ মাস কোনো খোঁজ-খবর রাখে নাই। অথচ উনারা সেফ জোনে আছে। এটা আমাদের কর্মীদের মধ্যে একটা হতাশা তৈরি করেছে। কিন্তু এখন আবার পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। এখন অনেকেই খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।’ কিন্তু কী করতে হবে সে বিষয়ে দলীয় কোনো নির্দেশনা কি পেয়েছেন এমন প্রশ্নে নির্দেশনা পাওয়ার কথা জানান বারী। ‘নির্দেশনা হচ্ছে আগে নিজেকে সেফ রাখতে হবে। প্রস্তুত হতে হবে এবং ধৈর্য ধরতে হবে। আমাদের অঙ্গ সংগঠনের সভাপতি আমাকে ফোন করেছিলেন। এটাই বলেছেন তিনি। এরপর জানতে পেরেছি অচিরেই দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা আপা বক্তব্য দেবেন, ভার্চুয়াল মিটিং হবে। সেখানে আমাদের জুমে কানেক্ট হতে বলেছেন। সেখানে আপা (শেখ হাসিনা) যে নির্দেশনা দেবেন, তার আলোকে কাজ করতে হবে।’
জনগণের সামনে যাওয়াই হবে বড় চ্যালেঞ্জ: আওয়ামী লীগ বলছে, কর্মসূচির মাধ্যমে সাংগঠনিকভাবে সক্রিয় হওয়ার কথা। সেরকম পরিস্থিতিও দেখছেন দলের নেতারা। যদিও বাস্তবে দলটির জন্য নানা চ্যালেঞ্জ দেখছেন বিশ্লেষকরা। এক. প্রশাসনিক বাধা, গ্রেপ্তার এবং মামলার আতঙ্ক আছে নেতাকর্মীদের মধ্যে। দুই. অভ্যুত্থানের পর দলটির ভঙ্গুর সাংগঠনিক কাঠামো। তিন. দলীয় নেতাদের অনুপস্থিতি। চার. গণহত্যার অভিযোগ। তবে এসবের মধ্যেই রাজনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন আওয়ামী লীগের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দেখছেন, দলটি জনগণের মুখোমুখি কীভাবে হবে তা নিয়ে।
‘চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, আওয়ামী লীগ জনগণের সামনে কীভাবে আবার দাঁড়াবে। কী কৌশল নিয়ে দাঁড়াবে, কী বার্তা নিয়ে নিয়ে দাঁড়াবে, কী উদ্দেশ্য নিয়ে দাঁড়াবে এবং কী কর্মসূচি নিয়ে দাঁড়াবে। আবার জনগণের সামনে আসলেও জনগণ তাদের বার্তাকে কীভাবে নেবে সেটা দেখার বিষয়,’ বলেন জোবাইদা নাসরীন। তার মতে, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ নয়। কিন্তু তাদের জন্য পরিস্থিতি এখন বেশ কঠিন। ‘একটা গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যখন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়, তখন এরকম একটি দলকে জনগণের কাছে নানারকম জবাবদিহিমূলক অবস্থায় থাকতে হয়। তো সেখানে আওয়ামী লীগ জনগণকে কীভাবে ফেস করবে, কীভাবে আসলে জনগণের কাছে রাজনৈতিক বার্তা নিয়ে যাবে, সেটা কিন্তু তাদের জন্য রাজনৈতিক দল হিসেবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এই মুহূর্তে।’
আওয়ামী লীগের জন্য বাস্তবতা প্রতিকূল তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এমনকি গত ৫ আগস্টের পর দলটিকে নিষিদ্ধ করার মতো দাবিও উঠেছে বিভিন্ন পক্ষ থেকে। যদিও কোনো কোনো রাজনৈতিক দল আবার এর বিরোধিতাও করেছে। তবে আদালতে জুলাই গণহত্যার বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে বিচারিকভাবেই নিষিদ্ধ হওয়ার ঝুঁকি আছে আওয়ামী লীগের। ফলে তেমন পরিস্থিতিতে পড়ার আগেই কর্মসূচি বাস্তবায়নের মতো সাংগঠনিক অবস্থা তৈরি করতে চায় আওয়ামী লীগ। দলটি মনে করছে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে অন্তর্র্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে তাদের ভাষায় ‘জনরোষ এখন সময়ের ব্যাপার’। ফলে বিভিন্ন ইস্যুতে মাঠে নামার পর সেখানে জনসমর্থন পাওয়া যাবে বলেই আশাবাদী আওয়ামী লীগ। যদিও রাজনীতির জটিল সমীকরণ যে এতো সরলভাবে মিলে যাবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
জোবাইদা নাসরীন বলেন, গণঅভ্যুত্থানে পতন হওয়ার পর আওয়ামী লীগ দল হিসেবে জনগণের মুখোমুখি কীভাবে হবে সেটা হচ্ছে দলটির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, আওয়ামী লীগ জনগণের সামনে কী কৌশল নিয়ে দাঁড়াবে, কী বার্তা নিয়ে দাঁড়াবে, কী উদ্দেশ্য নিয়ে দাঁড়াবে এবং কী কর্মসূচি নিয়ে দাঁড়াবে। আবার জনগণের সামনে আসলেও জনগণ তাদের বার্তাকে কীভাবে নেবে এগুলো এখনও অনিশ্চিত।
মানবকণ্ঠ/আরএইচটি
Comments