দুর্নীতিতে পাঁচবার বাংলাদেশকে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছে অতীতের শাসকরা: চরমোনাই পীর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, ৫৩ বছরে দেশ একবার, দুইবার নয় পাঁচবার দুর্নীতিতে বাংলাদেশকে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছে অতীতের শাসকরা। এই দুর্নীতিবাজদের রাষ্ট্র পরিচালনার থেকে দূরে রেখে পরিবর্তন আনতে হবে। সৎ, যোগ্য ও ন্যায়পরায়ণ মানুষকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করতে হবে।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে ইসলামী আইনজীবী পরিষদের উদ্যোগে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সৃষ্টি যার আইনও হবে তার। তিনি বলেন, সর্ব ক্ষেত্রে যদি সৃষ্টিকর্তার (আল্লাহর) অগ্রাধিকার থাকে তবে তার নীতি ও আদর্শ অনুযায়ী বিচার বিভাগসহ সব কিছু চলবে, এটাই বাস্তবতা।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ব্রিটিশসহ অন্যান্য মাধ্যমে বিচার পরিচালনা করার কারণে সমাজ ও রাষ্ট্রে অশান্তি, অসুন্দর, সত্যকে মিথ্যা, মিথ্যাকে সত্য করার বহু প্রবণতা আছে। মুসলমান সর্ব ক্ষেত্রে মানব রচিত আইনের পরিবর্তে কোরআনের আইন বাস্তবায়ন করবে।
তার পরও অনেক মুসলমান আইন ও রাষ্ট্র পরিচালনার বিষয়ে ইসলামকে গুরুত্ব দিতে চায় না।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির বলেন, মুসলমান দাবি করলে সর্ব ক্ষেত্রে আল্লাহর আইন মানতেই হবে। ইসলামী নীতি-আদর্শ বাস্তবায়ন করলে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে শুধু শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, অনেকে ইসলামের আইনের কথা শুনলে ভয় পায়। অথচ সম্পত্তি বণ্টনে ইসলামের বিধান অনুসরণ করা হয়। এখানে কোনো বৈষম্য আছে বলে কখনো কেউ বলতে পারেনি।
তিনি বলেন, কেউ না বুঝে ইসলামী আইনের মধ্যে কঠোরতা রয়েছে বলে প্রচার করে। এ জন্য প্রকৃত অর্থে ইসলামকে আগে বুঝতে হবে। ইসলামে চুরি করলে হাত কেটে দেওয়া হয়, এটা সঠিক। কিন্তু ইসলাম সব চোরের হাত কাটার নির্দেশ দিয়েছে কি না, এটা জানা থাকা দরকার।
তিনি বলেন, চোর দুই প্রকার, একটি অভাবী, আরেকটি স্বভাবী। মন্ত্রী-এমপি যারা রাষ্ট্রীয় অর্থ-সম্পদ চুরি করে বিদেশে পাচার করে এরা অভাবী চোর নয়, স্বভাবী চোর। অভাবী চোরের হাত কাটা নির্দেশ ইসলামে নেই। ইসলাম স্বভাবী চোরদের হাত কেটে দিতে বলেছে। বাংলাদেশের একজন স্বভাবী চোরের হাত কেটে দেওয়া হলে এ দেশে চুরি থাকবে না। তাই বাংলাদেশে চুরি বন্ধে হাত কাটার আইন থাকতে হবে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ফ্যাসিস্ট তাড়িয়েছি। আবার নতুনভাবে যাতে ফ্যাসিস্টের জন্ম না হয় সেদিকে সবাইকে নজর রাখতে হবে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ছেলে, বাবা বা আত্মীয় চেনে না। যে যখন অপরাধ করবে ইসলামী আন্দোলন তার বিরুদ্ধে তখন রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়বে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, দেশে শান্তি চাইলে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ইসলামী আদর্শ বাস্তবায়ন করা জরুরি। মুসলমান হয়ে আল্লাহর ওপর ঈমান এনেছি। তাই সকলকে মানতে হবে, ‘সৃষ্টি যার আইন হবে তার’। আইনজীবীদেরকে ন্যায়ের পক্ষে আইনি লড়াই করতে হবে। শেরেবাংলা একে ফজলুল হকসহ অনেকেই ন্যায়ের পক্ষে লড়াই করেছেন।
এ সময় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির আগামী ২০২৫-২০২৬ সেশনের জন্য ইসলামী আইনজীবী পরিষদের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আতিয়ার রহমানকে সভাপতি, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আবদুল বাসেতকে সিনিয়র সহসভাপতি, অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ হারুন অর রশিদ, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মশিউর রহমানকে সহসভাপতি, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হানিফ মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ বায়জিদ হোসেনকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
মানবকণ্ঠ/এসআরএস
Comments