Image description

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘মব জাস্টিস ও কিলিং মিশন’ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সমর্থন করে না। এসব ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। এ সময় এই ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে একটি পক্ষ সরকারকে বিব্রত অবস্থায় ফেলতে চায় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। 

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় ও লক্ষ্মীপুর জেলায় বন্যার্তদের ত্রাণ বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, সারাদেশে যে মামলাগুলো রয়েছে, এরমধ্যে অনেকগুলোই গ্রহণযোগ্য নয়। সে ক্ষেত্রে আমাদের আহ্বান রয়েছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই যেন মামলাগুলো করা হয়। সেই মামলার ভিত্তিতেই যেন পুলিশসহ প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে ও জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়।

রাষ্ট্রীয় সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে নাহিদ বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের ৬টি সংস্কার কমিটি হয়েছে। বৃহস্পতিবার কমিটির সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে। অক্টোবর মাস থেকেই সংস্কার কমিটির কার্যক্রম শুরু হবে। শিক্ষা ও গণমাধ্যমসহ আরও কিছু সংস্কার কমিশন গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে। কমিশনগুলো সংশ্লিষ্ট ও অভিজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে রূপরেখা তৈরি করবে। তখন সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক পক্ষ মিলেই আমরা রূপরেখা অনুযায়ী সংস্কার কার্যক্রম শুরু করবো।

তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের বড় দুর্যোগ এসেছে আমাদের দেশে। আমরা দেখেছি, এ দুর্যোগে দেশের জনগণ সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে। ছাত্ররাসহ একত্রে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জনগণ ও প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করেছে। এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, এখন আমরা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের কার্যক্রমের দিকেই যাচ্ছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজটি এগিয়ে নিতে আমরা কাজ করছি। পানি কমছে, মানুষজনও আশ্রয়ণ কেন্দ্র থেকে চলে যাচ্ছে। লক্ষ্মীপুরে পানি দেরি করে কমছে, কারণ এখানে খালগুলো দখল হয়ে গেছে। সে খালগুলো যদি দখলমুক্ত করা যায়, তাহলে তা দীর্ঘমেয়াদী সুরাহা হবে। এখানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের গৃহ নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে বরাদ্দ পাঠানো হয়েছে। সে বরাদ্দ অনুযায়ী খুব শীঘ্রই গৃহ নির্মাণ করা হবে। জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি আমরা সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। দীর্ঘ মেয়াদী পুনর্বাসনের জন্য শিক্ষা-স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে এ জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করার জন্য সরকার সার্বিকভাবে কাজ করবে।

পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে সার্বিক যে যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা পূরণ করে আগের জায়গায় সে গতিতে ফিরিয়ে আনাই আমাদের লক্ষ্য। প্রশাসন ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা সুন্দরভাবে ত্রাণ কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে গেছে। পুনর্বাসনের কার্যক্রমেও তারা একইভাবে সম্মিলিতভাবে সক্রিয় থাকবে বলে প্রত্যাশা করছি। পরে বন্যায় দুর্গতদের মাঝে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করেন তিনি।

এ সময় তিনি বলেন, গণমাধ্যমের কিছু দাবি দাওয়া রয়েছে। বাংলাদেশে গণমাধ্যম কিভাবে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে গণমাধ্যম সংস্কার কমিটি সে প্রস্তাবনা গুলো দিবে।

নোয়াখালীতে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে অন্যন্যাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ, সেনাবাহিনীর মেজর নাফিস, বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমানসহ জেলা উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। লক্ষ্মীপুরে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে জেলা প্রশাসক রাজিব কুমার সরকার, জেলা পুলিশ সুপার মো. আকতার হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভি দাশ ও সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিন ফারুক মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


মানবকণ্ঠ/এফআই