Image description

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. ইউনূসকে পাওয়ায় আমরা গর্বিত। তিনি একজন বিশ্বনন্দিত ভালো লোক। তবে প্রশাসন পরিচালনা করার জন্য আরও কঠোর হওয়া প্রয়োজন। সংস্কারের জন্য অনন্তকাল সময় দেওয়া যায় না। নির্বাচন বিলম্ব হলে দেশ গভীর সংকটে পড়বে। তাই নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার এবং দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিকল্প নেই।

শনিবার রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘রাষ্ট্র সংস্কারের পর জাতীয় নির্বাচন গণতন্ত্রকে সুসংহত করবে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। ছায়া সংসদে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকদের পরাজিত করে কবি নজরুল সরকারি কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। পাশাপাশি অনুষ্ঠানে মতিউর রহমান চৌধুরীকে তার দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে সাহসী, সততা ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার জন্য বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। 

মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, সংবিধান পুনর্লিখন নয়, সংস্কার করা যেতে পারে। পুনর্লিখন করলে বিপদ হবে। ছাত্র-জনতার বিপ্লব ব্যর্থ হলে সামাজিক বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। তবে দেশে সেনাশাসন আসার কোনো শঙ্কা নেই। এখনকার যুগে সেনাশাসন সম্ভব নয়। সেনাশাসন হলে উন্নয়ন সহযোগীরা সহায়তা বন্ধ করে দিবে। আমেরিকা, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সেনাশাসনের বিপক্ষে। তবে বিপ্লব ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ ব্যর্থ হবে। আর বাংলাদেশ ব্যর্থ হলে আমরা অস্তিত্ব সংকটের মুখোমুখি হবো। 

তিনি আরও বলেন, জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচার বিলম্ব হলে ফ্যাসিস্টরা আবার ফিরে আসার ঝুঁকি রয়েছে।একইসঙ্গে হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রাপ্তিতেও সংশয় রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতা কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের অনেক নেতা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন এবং স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর সঙ্গে আঁতাতের মাধ্যমে তা সম্ভব হয়েছে। 

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, সীমাহীন অন্যায়-অত্যাচার, জুলুম, হামলা-মামলা, গুম-খুন করার চরম পরিণতিতে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মুখে এক কাপড়ে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে পতিত সরকারের প্রধানকে। বিগত সরকারের শাসনামলে অন্যায়, দুর্নীতি, দুঃশাসন প্রতিরোধের অংশ হিসেবে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ শুরু করেছে বর্তমান সরকার। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ কতদিন হওয়া উচিত- তা নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। আমি মনে করি, এক-দেড় বছরের আগে নির্বাচন হলে বিদ্যমান ব্যবস্থার খুব বেশি পরিবর্তন হবে না। তাই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য একটা যৌক্তিক সময় অন্তর্বর্তী সরকারকে দেওয়া উচিত। তা না হলে ছাত্র-জনতা যে ম্যান্ডেট দিয়ে বর্তমান সরকারকে দায়িত্ব প্রদান করেছে, সেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য সরকার অর্জন করতে পারবে না। তবে অবশ্যই যতদ্রুত সময়ের মধ্যে সম্ভব রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা করে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা উচিত।