ছাত্রলীগের রাজনীতি নিষিদ্ধে প্রমাণ করে আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসী দল। গণহত্যা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের দায়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর শহরের এন আহাম্মদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গণসমাবেশে তিনি দাবি জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মামুনুল হকে বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতসহ সকল রাজনৈতিকদলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এখনও ষড়যন্ত্র শেষ হয়নি। ষড়যন্ত্র চলছে। তাই সামনের দিনগুলোতে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। নয়তো যে স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে, সেটা ছিনতাই হতে পারে।’
বর্তমান সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ মহাসচিব বলেন, ‘সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগের রাজনীতি নিষিদ্ধে প্রমাণ করে শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। তাই শুধু ছাত্রলীগ নয়, সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে দেশে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানাই।’ এটাই এখন মানুষের দাবি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মামুনুল হক অভিযোগ করে বলেন, ‘১৯৭১ সালের স্বাধীনতার মহান বিজয় কয়েক মাসের মধ্যে ছিনতাই করে নিয়েছে ভিনদেশি একটি রাষ্ট্র। বাংলাদেশের হাজার বছরের ঐতিহ্য এবং এই দেশের ৭ কোটি মানুষের ইচ্ছা এবং অভিপ্রায়ের বিরুদ্ধে ভিনদেশি আরেকটি রাষ্ট্রের সংবিধানের মূলনীতিগুলো কলমের খোঁচায় একটি প্রেসক্রিপশনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতি হিসেবে স্থাপন করা হয়েছে।
আর এর মাধ্যমে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের একটি নতুন চেতনা তৈরি করা হয়েছে। এর চেয়ে দুঃখের বিষয় হলো ১৯৭২ সালের চেতনাকে সবসময় বাংলাদেশের মানুষের কাছে ৭১ সালের চেতনা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এইভাবে ৭২ সালের চেতনার মাধ্যমে ৭১ সালের চেতনাকে ছিনতাই করা হয়েছে। গত ৫০ বছর ধরে খুনি হাসিনা নিজ দলের নেতা-কর্মী ও দেশের মানুষের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে।’
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আরও বলেন, ‘ছাত্র-জনতার ওপর গণহারে যেভাবে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে, এটা কোনো সভ্য দেশে হতে পারে না। শুধুমাত্র ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বছরের পর বছর হত্যা, গুম ও খুন নির্যাতন চালিয়েছে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা। কিন্তু ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেনি। এদেশের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে ভারতে। ভারত কীভাবে হাজার হাজার মানুষ খুনের আসামি শেখ হাসিনাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে, এটাই এখন বড় প্রশ্ন।
কারণ ভারতের প্রশ্রয়ে শেখ হাসিনা সেখানে বসে দেশের বিরুদ্ধে, জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ বানাতে পাঁয়তারা করছে। কিন্তু দেশের মানুষ কোনোভাবেই এটা মেনে নিবে না। অনতিবিলম্বে ইন্টারপোলের মাধ্যমে খুনি শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের দেশে এনে বিচার করতে হবেই হবে।’
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের জেলা শাখার সভাপতি মাও. লোকমান হোসেনের সভাপতিত্বে গণসমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, যুগ্ম-মহাসচিব মা. জালাল উদ্দিন আহমদে, তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজি, আতা উল্যাহ আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুর রহমান হেলাল, মো. ফয়সালসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা-উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।
Comments