মাদারীপুরে বিরল প্রজাতির প্রাণী গন্ধগোকুল আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে মাদারীপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের পাকদী এলাকায় এটিকে আটক করেন স্থানীয় মনির তালুকদার নামে এক কৃষক। প্রাণীটির শরীর থেকে সুগদ্ধ ছড়াচ্ছে এমন খবরে এটিকে দেখতে ভিড় করছেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ।
জানা যায়, বিরল এই প্রাণীটি ধরা পড়ে ইঁদুর মারা ফাঁদের খাঁচায়। পরে এটিকে অন্য একটি বড় খাঁচায় সংরক্ষণ করা হয়। বিলুপ্ত প্রাণীটিকে কেউ বলে থাকনে তাল খাটাশ, কেউ বা আবার ভোন্দর, আবার কেউ বলেন সাইরেল। মূলত বনজঙ্গল ও পুরনো এলাকার গাছপালায় এই প্রাণীটির আবাসস্থল। এর শরীর থেকে বের হয় পোলাও চালের সুগন্ধ। তাই এটিকে ডাকা হয় গন্ধগোকুল নামে। ইউটিউব ও ফেসবুকে বেশ পরিচিতি থাকলেও গাছপালা কমে যাওয়ায় দিনদিন কমছে গন্ধগোকুলের সংখ্যাও।
মাদারীপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের পাকদী এলাকায় প্রাণীটি আটকের পর দেখতে ভিড় করেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ। খবর পেয়ে বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে ঘটনাস্থল গিয়ে প্রাণিটিকে নিয়ে আসেন বন কর্মকর্তারা। চিড়িয়াখানা কিংবা খুলনা বনাঞ্চলে এটিকে অবমুক্ত করার কথা জানান তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. ফারুক মিয়া বলেন, বিরল প্রাণীটি এর আগে আমরা কখনই দেখি নাই। তাই দেখতে আসলাম। পরে ইউটিউবে সার্স করে দেখলাম এটি গন্ধগোকুল নামে পরিচিত।
স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থী সিজান ইসলাম রাফি বলেন, এর আগে এমন একটি প্রাণী আমি চিড়িয়াখানা ও ইউটিউবও দেখেছিলাম। এটিকে আমার ভোন্দর নামে জানি। প্রাণীটি আটক হয়েছে এমন খবর শুনে বন্ধুদের সঙ্গে দেখতে আসলাম। এখানে এসে খুব মজা করছি।
বিরল প্রাণীটি উদ্ধারকারী কৃষক মনির তালুকদার বলেন, ৮-১০ দিন আগে এটিকে দেখা যায় পাকদী এলাকায়। প্রাণীটিকে আশপাশের বাগানেও ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। তারপর থেকে বিভিন্ন প্রচেষ্টায় ইঁদুরের খাঁচায় গন্ধগোকুলকে বন্দি করা হয়। পরে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে এটিকে হস্তান্তর করা হয়।
সামাজিক বন বিভাগ মাদারীপুর অফিসের বাগান মালী মো. হুমায়ুন কবির বলেন, এক সময়ে গন্ধগোকুল প্রাণী অনেক দেখা গেলেও এখন আর সেটা দেখা যায় না। মনির তালুকদার এটিকে উদ্ধার করেছেন। প্রাণীটি আপাতত মাদারীপুর অফিস নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে কোন চিড়িয়াখানা কিংবা খুলনা বনাঞ্চলে এটিকে অবমুক্ত করা হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২২ সালের ৭ জানুয়ারি ডাসার উপজেলার পশ্চিম বালিগ্রাম থেকে এমন আরেকটি গন্ধগোকুল উদ্ধার করেন এলাকাবাসী। পরে প্রশাসন ও বন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে খুলনা বনাঞ্চলের প্রাণীটিকে অবমুক্ত করা হয়।
মানবকণ্ঠ/এসআরএস
Comments