Image description

অস্ট্রেলিয়ার ভিসা সেন্টার নয়া দিল্লি থেকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টনি বার্ক। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে সাক্ষাত করে এই পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম উচ্চপদস্থ অস্ট্রেলীয় কর্মকর্তা হিসেবে বাংলাদেশ সফর করছেন টনি বার্ক।

সরকারপ্রধানের দপ্তর থেকে জানানো হয়, বৈঠকে টনি বার্ক প্রধান উপদেষ্টাকে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা সেন্টার ঢাকায় ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনার কথা বলেন।

ইউনূস দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাংলাদেশ সফরের জন্য এবং অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রচেষ্টায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন করায় অস্ট্রেলীয় মন্ত্রীকে ধন্যবাদ দেন।

বার্ক জানান, তার নির্বাচনী এলাকা বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশীদের আবাসস্থল। বাংলাদেশের ঘটনাবলীর ওপর গভীর আগ্রহ নিয়ে তিনি নজর রাখছেন এবং বাংলাদেশে ‘স্বৈরাচারী শাসনের’ পতনের পর জনগণের বিশাল উদযাপন তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন।

দেশ পুনর্গঠনের কাজ যে অনেক বড়, সে কথা বৈঠকে স্বীকার করেন ইউনূস। তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচারী সরকার’ সমস্ত প্রতিষ্ঠান ‘ধ্বংস করে’ দিয়েছিল এবং অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল।

“চ্যালেঞ্জ অনেক বড়। প্রত্যাশা পূরণ সবচেয়ে কঠিন অংশ। কিন্তু জনগণ ধৈর্যশীল। আমাদের আবার সব কাঠামো গড়ে তুলতে হবে।”

বার্ক বাংলাদেশ থেকে অনিয়মিত অভিবাসনের বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, তার সরকার এ বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে চায়।

ইউনূস অনিয়মিত অভিবাসীদের নিয়মিত করার জন্য এবং বাংলাদেশ থেকে নিয়মিত অভিবাসনের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য মন্ত্রীকে আহ্বান জানান।

ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনসহ বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ইতিহাসও আলোচনায় উঠে আসে। ইউনূস বলেন, "আমাদের স্বাধীনতার বীজ এই আন্দোলন থেকে এসেছে।”

প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন কমিশনের কাজ সম্পর্কে আলোচনা করেন, যার মধ্যে পাঁচ সদস্যের গুম তদন্ত কমিটির বিষয়টিও আসে, যে কমিটি ‘স্বৈরাচারী’ শাসনকালে ঘটে যাওয়া শত শত গুমের ঘটনা তদন্ত করছে।

অধ্যাপক ইউনূস ‘দ্য আর্ট অফ ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি বই অস্ট্রেলীয় মন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। গণ-অভ্যুত্থানের সময় দেয়ালে দেয়ালে আঁকা গ্রাফিতি ও ম্যুরাল নিয়ে এ বই প্রকাশ করা হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ উপহারের প্রশংসা করেন এবং বলেন, ঢাকার কিছু এলাকা ঘুরে তিনি শিল্পকর্মগুলো দেখতে চান।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম পরে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “অস্ট্রেলিয়া চাচ্ছে তাদের ভিসা সেন্টার নয়া দিল্লি থেকে ঢাকায় নিয়ে আসার জন্য। অভিবাসন বিষয়ে ইরেগুলার অভিবাসন নিয়ে আরও জোরদার কথা বলতে চাচ্ছে দেশটি। নিয়মিত অভিবাসন যেন আরও বাড়ে, সে বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জোর দেওয়া হয়েছে। তারা দেখবেন বলেও তিনি জানিয়েছেন।”

সব আনুষ্ঠানিকতা সারার পরও এ বছরের শুরুতে মালয়েশিয়া যেতে না পারা ১৮ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক দেশটিতে যেতে পারবে বলে জানান শফিকুল আলম।

তিনি বলেন, “এ কাজটা আমরা শুরু করেছি। তাদের ভেরিফিকেশনের কাজটা শুরু হয়েছে। আমরা আশা করি খুব দ্রুত তারা মালয়েশিয়া যেতে পারবে।’’

মানবকণ্ঠ/এসআরএস