আধুনিক স্পেনের ইতিহাসে ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা দেড় শতাধিক ছাড়িয়েছে। ভারী বর্ষণে এখনো দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চল বিপর্যস্ত। উদ্ধারকারীরা জীবিতদের খুঁজে বের করতে কাজ করছেন। শুক্রবার (০১ নভেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, স্পেনের ভয়াবহ বন্যা বিপর্যয়ে অন্তত ১৫৮ জন মারা গেছে। বৃহস্পতিবার এক হাজার ২০০ জনেরও বেশি উদ্ধারকর্মী ড্রোনের সাহায্যে উদ্ধার অভিযানে অংশ নিলেও বৃষ্টির কারণে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পরিদর্শনে গিয়ে বলেছেন, "এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যতটা সম্ভব জীবন বাঁচানো।"
স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ায় কমপক্ষে অন্তত ১৫৫ জনের মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া পশ্চিমের কাস্টিলা-লা মাঞ্চায় আরও দুইজন এবং আন্দালুসিয়ায় একজন ব্রিটিশ ব্যক্তি মারা গেছেন। এদের মধ্যে ভ্যালেন্সিয়ার পাইপোর্টা শহরের একটি নদীর তীর ধসে অন্তত ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার আন্ডারটেকার এবং ফিউনারেল ভ্যানগুলোকে রাস্তা থেকে বেশকিছু মৃতদেহ উদ্ধার করতে দেখেছে বিবিসি। তখন কাছাকাছি রাস্তাগুলোতে ঝড়ের তাণ্ডবে ভেসে যাওয়া গাড়িগুলো একটির উপর অপরটি উঠে ছিল।
স্প্যানিশ আবহাওয়া সংস্থা এইমেটের তথ্যমতে ভ্যালেন্সিয়ার নিকটবর্তী চিভা শহরে মাত্র আট ঘণ্টায় এক বছরের সমান বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশের দক্ষিণ এবং পূর্বাঞ্চলের জন্য আরও বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়। পরে রাজা ফিলিপ ষষ্ঠ সতর্ক করে দিয়ে বলেন জরুরী অবস্থা "এখনও শেষ হয়নি" এবং প্রধানমন্ত্রী সানচেজ নাগরিকদের যেখানে প্রয়োজন সেখানে আশ্রয় নিতে আহ্বান জানান।
এদিকে বন্যা কবলিত এলাকায়, শত শত লোক অস্থায়ী বাসস্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন। পাশাপাশি রাস্তা পরিষ্কার এবং বাড়িঘর ও ব্যবসা পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ শুরু করছেন। ভ্যালেন্সিয়ার সঙ্গে স্পেনের বাকি অংশের সংযোগকারী অনেক রাস্তা এবং রেল নেটওয়ার্ক এখনো বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বন্যায় হতাহতদের জন্য স্পেনে বৃহস্পতিবার সরকারি ভবনে পতাকা অর্ধনমিত রেখে এবং মিনিট নীরবতার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তিন দিনের জাতীয় শোক পালন শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে এক ভয়াবহ বন্যায় ইউরোপে দুইশত মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ওই বন্যার পর এবারের বন্যাকে ভয়াবহ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। তবে স্পেনের আধুনিক ইতিহাসে এবারের বন্যা সবচেয়ে মারাত্মক।
Comments