গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজারকে স্যার না বলায় বাকবিতণ্ডা, ভিডিও ভাইরাল
মানিকগঞ্জে ‘স্যার’ না বলায় গ্রাহকের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার জড়িয়েছেন গ্রামীণ ব্যাংকের একজন সেকেন্ড ম্যানেজার। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এরপর থেকে নেটিজেনদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন গ্রামীণ ব্যাংকের ওই কর্মকর্তা।
বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা এলাকার গ্রামীণ ব্যাংক শাখায় এ ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, গ্রামীণ অফিসের সেকেন্ড ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ ঝিটকা বাজারের মিষ্টি ব্যবসায়ী সুব্রত সন্ন্যাসীর সঙ্গে এমন অসৎ আচরণ করেন।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজারকে গ্রাহক ‘ভাই’ বলে ডাকায় সেকেন্ড ম্যানেজার বলছেন, ‘ভাই’ বলেন কেন? গ্রাহক তখন বলেন, কেন ‘ভাই’ বলা যাবে না? সেকেন্ড ম্যানেজার বলেন, ‘ভাই’ বলা যাবে না, ‘ভাই’ বলবেন না। গ্রামীণ ব্যাংকের সবাইকে ‘স্যার’ বলতে হবে এটাই নিয়ম। এসময় গ্রাহক বলেন, কোথায় লেখা আছে আপনাদের ‘স্যার’ বলতে হবে, দেখান।
সেকেন্ড ম্যানেজার তখন আঙুল নাচাতে নাচাতে গ্রাহককে বলেন, আপনি এত বার্গেনিং করছেন কেন? গ্রাহক বলেন, আমি ভদ্রভাবে কথা বলছি। সেকেন্ড ম্যানেজার বলেন, আপনি ওনাকে (এক কর্মকর্তাকে দেখিয়ে) ‘ভাই’ বললেন কেন, আপনার কোন সম্পর্কের ভাই উনি? আপনি কথাবার্তা সাবধানে বলবেন। গ্রাহক তখন বলেন, আপনি নখ নাচিয়ে কথা বলবেন না। এসময় সেকেন্ড ম্যানেজারকে তার চেয়ার থেকে রাগান্বিতভাবে উঠতে দেখা যায়।
ভুক্তভোগী সুব্রত সন্ন্যাসী বলেন, গতকাল বুধবার দুপুরে টাকা উঠানোর জন্য গ্রামীণ ব্যাংকে যাই। ব্যাংক কর্মকর্তা আমাকে কিছুক্ষণ বসিয়ে রেখে বললেন আগামীকাল আসার জন্য। তখন আমি বিষয়টা ব্রাঞ্চ ম্যানেজারকে বলি, ভাই তাহলে কাল কখন আসবো? এটা বলার পরেই পাশ থেকে সেকেন্ড ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং আমাকে ভাই বাদ দিয়ে স্যার বলে সম্বোধন করতে বলেন। তখন আমি তাকে কয়েকটা প্রশ্ন করলে সে আমার দিকে আঙ্গুল তুলে এবং আমাকে মারতে উদ্যোত হয়। তখন পাশ থেকে অফিসের অন্য একজন স্টাফ আমার মোবাইল কেড়ে নেয় এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এমন ঘটনার আমি তীব্র নিন্দা জানাই এবং সেই কর্মকর্তার প্রাতিষ্ঠানিক আইনত শাস্তি দাবি করি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত সেকেন্ড ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিষয়টা একটা ভুল বোঝাবুঝির। বিষয়টা সমাধানের জন্যই আমি আর ম্যানেজার ঝিটকা বাজারে সুব্রত সন্ন্যাসীর দোকানে এসেছি। গলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফি বিশ্বাস এবং গণ্যমান্যরা আছেন। বিষয়টা নিয়ে সমাধানের চেষ্টা চলছে।
গ্রামীণ ব্যাংক ঝিটকা শাখার ম্যানেজার অদ্বৈত কুমার মৃধা বলেন, আজ সন্ধ্যায় আমরা বিষয়টা নিয়ে আমাদের গ্রাহক সুব্রত সন্ন্যাসীর দোকানে বসে ছিলাম। আমরা বিষয়টা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছি। এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আমরা এর জন্য অনুতপ্ত।
এ বিষয়টা নিয়ে আমাদের সেন্ট্রাল অফিস থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামীকাল তারা আসবেন, তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
মানবকণ্ঠ/এসআরএস
Comments