বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) বেগম রোজী কবির মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ বুধবার ভোর ৫টার দিকে ঢাকা এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বেগম রোজী কবিরের মৃত্যুর তথ্য আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মো. ইদ্রীস আলী। তিনি জানান, রোজী কবির দীর্ঘদিন ধরে লিভার জটিলতায় ভুগছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বেগম রোজী কবির চট্টগ্রাম নগরীর উত্তর হালিশহরের প্রখ্যাত জমিদার আজগর আলী চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দক্ষিণ হালিশহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও বন্দর থানা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং এশিয়াটিক কটন মিলের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবিরকে তিনি বিয়ে করেন। রোজী কবিরের দুই ছেলে দুই মেয়ে বিদেশ থেকে উচ্চ নিয়ে বিভিন্ন পেশায় কর্মরত আছেন।
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে রোজী কবির তিনবার সংসদ সদস্য (সংরক্ষিত আসন) নির্বাচিত হন। বিএনপির জন্মলগ্ন থেকে দলটির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অসামান্য ভূমিকা পালন করেন বেগম খালেদা জিয়ার বিশ্বস্ত এই সহযোদ্ধা। রোজী কবির জাতীয়তাবাদী মহিলা দল চট্টগ্রাম নগর কমিটির সভাপতি, মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারীসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন সম্পাদকীয় পদে দায়িত্ব পালন করেন।
রোজী কবিরের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় বড় ভাই সাবেক ডেপুটি স্পিকার ও পরিকল্পনামন্ত্রী ব্যারিস্টার সুলতান আহমেদের হাত ধরে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়ার সফরসঙ্গী হিসেবে তিনি থাইল্যান্ড, চীন, ইন্ডিয়া, চীন, শ্রীলঙ্কা, ডেনমার্ক, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফরের পাশাপাশি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ সভায় এবং সার্কের মতো গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
জাতীয় সংসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য ছাড়াও রোজী কবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএয়ের বোর্ড মেম্বার ছিলেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহাদাত হোসেন এক শোক বার্তায় বলেন, বেগম রোজী কবিবের মৃত্যুর সংবাদ আমার জন্য ভীষণ কষ্টের। বিএনপির রাজনীতিতে তিনি ছিলেন একজন সৎ, ত্যাগী ও নিবেদিত প্রাণ। বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে চট্টগ্রামে দলকে সুসংগঠিত করতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। সংসদ সদস্য থাকাকালীন সময়ে চট্টগ্রামের উন্নয়নে তিনি কাজ করে গেছেন। স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে তার ভূমিকা ছিল অপরিসীম। চট্টগ্রামে বিএনপির রাজনীতিতে তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
মানবকণ্ঠ/আরআই
Comments