অবশেষে উপদেষ্টাদের দেখা পেলেন রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) সামনের সড়কে আন্দোলনকারী আহতেরা। বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ২টার পর পঙ্গু হাসপাতালের গেটে যান চার উপদেষ্টা। পরে তাঁদের আশ্বাসে সড়কে অবস্থান থেকে হাসপাতালে ফিরে যান আহতেরা। উপদেষ্টাদের মধ্যে ছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
উপদেষ্টাদের উপস্থিতিতে সেখানে আহতদের চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা হয়। পরে সিদ্ধান্ত হয় বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বেলা ২টায় সচিবালয়ে আহতদের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বৈঠক হবে। সেখানে কীভাবে এই আহতদের পাশে সরকার থাকতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
এরআগে, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আন্দোলনকারীরা উপদেষ্টাদের হাজির হওয়ার জন্য আল্টিমেটাম দেন। তাঁরা বলেন, রাত ১০টার মধ্যে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, তথ্য উপদেষ্টা, যুব উপদেষ্টা, সমাজ কল্যাণ উপদেষ্টাকে পঙ্গু হাসপাতালের সামনে উপস্থিত হতে হবে।
পরে সময় পার হলেও দেখা মেলেনি উপদেষ্টাদের। রাত সোয়া ১২টার দিকে পঙ্গু হাসপাতালের গিয়ে দেখা গেছে, রাত বাড়লেও আহত ব্যক্তিরা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছে। সেখানে উপস্থিত আছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। আগারগাঁও থেকে শ্যামলী সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সবাই বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের পদত্যাগ দাবি করেও নানা স্লোগান দিচ্ছেন আন্দোলনকারীরা।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করতে যান মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। তখন তিনি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। তবে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে তিনি কোনো সমাধানে আসতে পারেননি।
আন্দোলনকারীরা তখন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের ঘটনাস্থলে আসতে বলেন। উত্তরে স্নিগ্ধ বলেন, ‘আমি শহীদ পরিবার থেকে আপনাদের কাছে এসেছি। এরচেয়ে কী উপদেষ্টারা বড় হয়ে গেল।’ এ সময় আন্দোলনকারীরা বারবার বলতে থাকেন, উপদেষ্টাদের এখানে আসতে হবে।
এরআগে, বেলা ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে আহতদের পঙ্গু হাসপাতালে দেখতে গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় অন্য গাড়িতে করে হাসপাতাল ছাড়েন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চলে যাওয়ার পর সরকারি তহবিল থেকে অনুদানের টাকা ও সুচিকিৎসার দাবিতে আগারগাঁও থেকে শ্যামলীমুখী সড়ক বন্ধ করে হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ-সমাবেশ করে আহতেরা। তাদের দাবি, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও সমন্বয়কদের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হলেই সড়ক ছাড়বেন তারা। না হলে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন তারা।
Comments