নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় দোকানের জায়গা ভরাটকে কেন্দ্র করে নিজ দলের প্রতিপক্ষের হামলায় এক যুবদল নেতা নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে চরফকিরা ইউনিয়নের দিয়ারা বালুয়া গুচ্ছগ্রাম ঘাটে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম ইউনুছ আলী (৩৯)। এতে আহত হয়েছেন তাঁর অপর তিন ভাই।
ইউনুছ আলী চরফকিরা ইউনিয়নের দিয়ারা বালুয়া গুচ্ছগ্রামের রইছুল হকের ছেলে। তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সভাপতি ছিলেন। গতকাল রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। হামলায় আহত তাঁর অপর তিন ভাই জহির উদ্দিন (৩৩), নিজাম উদ্দিন (২৮) ও মো. ফরহাদকে (২৪) নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল ও কোম্পানীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত ইউনুছ আলীর ভগ্নিপতি মো. আলমগীর বলেন, গতকাল দুপুরের দিকে তাঁর শ্যালক ইউনুছ আলী গুচ্ছগ্রাম ঘাটে তাঁদের ভাড়া নেওয়া দোকানের একটি জায়গায় মাটি ফেলতে যান। সেখানে তাঁর ওপর হামলা করে মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহজাহান ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনছুরুল হকের লোকজন। একপর্যায়ে হামলাকারীদের একজন তাঁর শ্যালকের পেটে ছুরিকাঘাত করেন। বাধা দিতে গেলে তাঁর তিন ভাইকেও মারধর করে আহত করা হয়। চারজনকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রাত নয়টার দিকে ইউনুছকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। পরে পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে।
আলমগীরের অভিযোগ, ‘শাহজাহান ও তাঁর ভাই মনছুরুল হক এলাকায় নিজেদের একক আধিপত্য বজায় রাখতে নদী–খাল দখল, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ করে আসছেন। গত বুধবার বিকেলে গুচ্ছগ্রাম ঘাটে তাঁদের ইজারা নেওয়া খাল দখল করে খালে বসানো জাল কেটে ফেলেন এই দুই বিএনপি নেতার লোকজন। এ নিয়ে সেদিনও তাঁদের সঙ্গে আমাদের লোকজনের কথা–কাটাকাটি হয়।’
অভিযুক্ত দুই বিএনপি নেতা মো. শাহজাহান ও মনছুরুল হক তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। তাঁরা বলেন, গতকাল তাঁরা মামলার হাজিরা দিতে নোয়াখালী জেলা শহরে আদালতে ছিলেন। মুছাপুরের কারা কাদের ওপর হামলা চালিয়েছে, তাঁরা জানেন না। তা ছাড়া যে মারা গেছেন, তাঁকেও তাঁরা ব্যক্তিগতভাবে চেনেন না। রাজনৈতিকভাবে তাঁদের ঘায়েল করতে কোনো বিশেষ গোষ্ঠী ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ওই ঘটনায় তাঁদের নাম জড়াচ্ছেন।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, হামলার ঘটনায় নিহত ইউনুছ আলীর বাবা রইছুল হক বাদী হয়ে নয়জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মানবকণ্ঠ/এসআর
Comments