Image description

পটুয়াখালীতে স্ত্রী ও সন্তানের ওপর অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। সন্তানসহ স্ত্রীকে বাড়ি ছাড়া পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন দুলাল চন্দ্র দেবনাথ। এখন ওই বাড়িতে মানবেতর জীবনযাপন করছে ৪ বছরের শিশু সন্তান ও তার মা সোমা দেবনাথ।

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) রাতে পটুয়াখালীর পিটিআই রোডস্থ এলিট হোমস নামক ভবনের ৫ তলায় দুলাল চন্দ্র দেবনাথের বাসায় গেলে তাদের এই মানবেতর জীবনযাপনের দৃশ্য দেখা  যায়। দুলাল চন্দ্র দেবনাথ পেশায় একজন আইনজীবী। তিনি বর্তমানে জেলা আদালতে অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (এডিপি) হিসেবে কর্মরত আছেন।

পরিবার এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অ্যাডভোকেট দুলাল চন্দ্র দেবনাথ ১৩ বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে পটুয়াখালীর বাসিন্দা সোমা দেবনাথকে বিয়ে করেন। তাদের একটি ৪ বছর বয়সী মেয়ে সন্তান রয়েছে। তারা সন্তান নিয়ে পটুয়াখালী পিটিআই রোডে নিজ বাড়িতে বসবাস করে আসছেন। কিন্তু বিগত কয়েকবছর থেকে দুলাল চন্দ্র দেবনাথ হঠাৎ করে তার স্ত্রী সোমা দেবনাথের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে শুরু করে। কখনও কখনও সোমা দেবনাথকে মারধরও করেন তার স্বামী। পরবর্তী সময়ে সোমা দেবনাথ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে তার স্বামী অপর একজন মহিলা আইনজীবীর সঙ্গে পরকীয়া করছে এবং তার সঙ্গে বিবাহবহিভূর্তভাবে বসবাস করছে। 

এমন পরস্থিতিতে বর্তমানে সোমা দেবনাথকে ভরণপোষন না দেওয়ায় স্থানীয়ভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে অভিযোগ দেন তিনি। এতে অভিযুক্ত আইনজীবী তাৎক্ষণিক ক্ষিপ্ত হয়ে তার স্ত্রীকে গালিগালাজ করে এবং বাসার বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে চলে যায় এবং লোক মারফত হুমকি প্রদান করে। বর্তমানে সোমা দেবনাথ বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ছাড়া অসহায় অবস্থায় বসবাস করছে। 

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী সোমা দেবনাথ বলেন, আমার স্বামী কিছুদিন আগে জানায় সে আরেকটা বিয়ে করছে। এরপর থেকেই সে বাসায় কোনো বাজার দেয় না। গত ৩০ অক্টোবর সে বাসার গ্যাস ও পানির লাইন বন্ধ কইরা দেছে। আমার চার বছরের একটা বাচ্চা আছে, ওরে যে একটু খাবার খাওয়াব তারও কোনো উপায় নাই। এরপর এই ৪ নভেম্বর বাসার বিদ্যুৎ এর লাইনও কেটে দিছে। এখন আমাদের এই বাসায় থাকতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। আমার এইটুকু বাচ্চা অন্ধকারে ভয় পায়। আর সে চায় আমরা যাতে এই বাসা ছেড়ে চলে যাই।

এদিকে অভিযুক্ত দুলাল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, আমার প্রথম স্ত্রী মৃত্যুবরণ করায় পর আমি সোমাকে বিয়ে করি। সেই ঘরে আমার একটা বাচ্চা আছে। আমার সেই বাচ্চাটার ওপর সোমা অমানবিক নির্যাতন করতো। এছাড়া সে অন্য এক পুরুষের সঙ্গে পরকীয়া করে। তাই আমি ক্ষীপ্ত হয়ে এমন কাজ করেছি। সে এই ব্যাপারে জেলা আইনজীবী সমিতিতে অভিযোগ দিয়েছে। আমি জেলা আইনজীবী সমিতির নেতা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহায়তায় এই সমস্যার সমাধান করব।

পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ ইমতিয়াজ বলেন, এমন একটি ঘটনা শুনেছি। অপরাধীর বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।