Image description

বিগত কয়েক বছর ধরেই মিয়ানমারের নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করেছে চীন। দেশটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, মিয়ানমারের জান্তা সরকারের স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল (এসএসি) আর চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) প্রকল্পগুলো রক্ষায় সক্ষম নয়। বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত বেইজিংয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এসএসি খুবই দুর্বল ও অস্থিতিশীল বলে বিবেচিত হচ্ছে বেইজিংয়ে।

মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ কারণেই মিয়ানমার জান্তা বাহিনীকে একটি যৌথ নিরাপত্তা কোম্পানি (জেভিএসসি) গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে চীন। এটি মিয়ানমারের গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে এবং জান্তার শীর্ষ সামরিক নেতাদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করেছে।

উত্তর শান রাজ্যের রাজধানী লাশিও গত আগস্টে বিদ্রোহীদের হাতে পতন হয়। এ ছাড়া উত্তর শান থেকে মধ্য মিয়ানমার ও রাখাইন পর্যন্ত সশস্ত্র সংঘাত ব্যাপক বেড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, এসব রাজ্য বা অঞ্চলের যেসব জায়গা দিয়ে চীনা মালিকানাধীন তেল ও গ্যাস পাইপলাইন এবং প্রস্তাবিত বিআরআই রেললাইন যাবে-যা কুনমিং থেকে রাখাইনের বঙ্গোপসাগর উপকূল পর্যন্ত সংযোগ স্থাপন করবে এবং মান্দালয়ে চীনা কনস্যুলেটে বোমা হামলার পর বেইজিং তার প্রকল্পগুলোর সুরক্ষার জন্য এই প্রস্তাব দিতে বাধ্য হয়েছে। তবে জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলো এবং তাদের মিত্ররা এ বিষয়ে কী প্রতিক্রিয়া দেখাবে-তা এখনো দেখার বিষয়।

২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর জান্তাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকেই মিয়ানমারজুড়ে সংঘাত ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। জান্তার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে সশস্ত্র বিদ্রোহের পর থেকে মিয়ানমারে চীনের বিআরআই প্রকল্পগুলো স্থবির হয়ে পড়েছে এবং নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে রয়েছে। ২০১৩ সালে বিআরআই চালুর পর থেকেই বিশ্বজুড়ে চীনা বেসরকারি প্যারামিলিটারি কোম্পানিগুলো চীনের মেগা প্রকল্পগুলোকে সহিংসতা ও অপরাধ থেকে রক্ষায় সক্রিয়। এই বেসরকারি নিরাপত্তা কোম্পানিগুলো (পিএসসি) চীনা বন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক যোগাযোগ রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয় গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, কর্মী অপসারণের মতো কার্যক্রমও পরিচালনা করছে।