জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ইন্সটিটিউট অব হেল্থ টেকনোলজি (আইএইচটি) শিক্ষার্থীরা বৈষম্য নিরসনের লক্ষ্যে ৬ দফা দাবি আদায়ে ক্লাস বর্জন করে একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচী পালন করছে। এতে ওই প্রতিষ্ঠানের পাঠদান ও পরীক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে।
সোমবার সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার গোপীনাথপুরে অবস্থিত ইন্সটিটিউট অব হেল্থ টেকনোলজি (আইএইচটি) তে ৬ দফা দাবি আদায়ে বিভিন্ন বিভাগ ও বর্ষের সকল শিক্ষার্থীরা মুল একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচী পালন করছেন। এসময় তাদের দাবি সম্বলিত বিভিন্ন ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, গত দেড় মাস আগে থেকে ইন্সটিটিউট অব হেল্থ টেকনোলজির (আইএইচটি) শিক্ষার্থীরা তাদের মাঝে চলা বৈষম্য নিরসনে বিভিন্ন দাবি দাওয়া উত্থাপন করে কর্মসূচী পালন করতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ২০ নভেম্বর থেকে ক্লাস বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচী পালন করে এবং গত ২৪ নভেম্বর থেকে প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক ভবনের মুল ফটকে তারা তালা ঝুলিয়ে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচী পালন করছেন।
৬ দফা দাবিগুলো হলো- ১। স্বতন্ত্র পরিদপ্তর গঠন করতে হবে, ২। ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের ১০ম গ্রেড (২য় শ্রেণীর পদমর্যাদা) প্রদান করে দ্রুত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র আনুপাতিক হারে পদ সৃজন পূর্বক দ্রুত নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে, ৩। পাশাপাশি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ২০১৩ সালের স্থগিতকৃত নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করতে হবে। গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের নবম গ্রেডের পদসৃষ্টি পূর্বক চাকুরীজীবিদের আনুপাতিক হারে পদোন্নতির নিয়ম বহাল রেখে স্ট্যান্ডার্ড সেট আপ ও নিয়োগবিধিতে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে, ৪। ঢাকা আইএইচটি কে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর করে একটা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল আইএইচটিতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট শিক্ষকদের স্বতন্ত্র ক্যারিয়ার প্লান গঠন করে বিদ্যমান নিয়োগ বিধি ও অসংগতিপূর্ণ গ্রেড সংশোধন করতে হবে, ৫। মেডিকেল টেকনোলজি কাউন্সিল ও ডিপ্লোমা মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড গঠন এবং প্রাইভেট সার্ভিস নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে, ৬। বি ফার্মসহ সকল অনুষদের বিএসসি ও এমএসসি কোর্স চালু করা এবং স্কলারশিপ সহ প্রশিক্ষণ ভাতা চালু করতে হবে।
ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী শারমিন আকতার বিথি বলেন, আমাদের এখানে ৬ দফা দাবি নিয়ে দীর্ঘ দিন থেকে আন্দোলন চলছে।চিকিৎসকদের মতো আমাদের দায়িত্বও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যে গুলো দাবি করছি সে গুলো যৌক্তিক। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই কর্মসূচী অব্যহত থাকবে।
আরেক শিক্ষার্থী এনামুল হক বলেন, আমরা পড়ালেখা করতে এসেছি, আন্দোলন করতে নয়। আমাদের যৌক্তিক দাবি গুলো মেনে নিলে আমরা দ্রুত শ্রেণি কক্ষে ফিরে যাব। এবিষয়ে কর্তৃপক্ষের দ্রুত দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
গোপীনাথপুর ইন্সটিটিউট অব হেল্থ টেকনোলজির অধ্যক্ষ ডা. মো. আব্দুল কুদ্দুস মন্ডল বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে অবগত আছেন। আশা করা যায় খুব দ্রুত এর একটা সমাধান হবে। শিক্ষার্থীদের ক্লাস করার পাশাপাশি আন্দোলন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই ভাবে চলতে থাকলে তাদের পড়াশোনার বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহব্বান করছি।
মানবকণ্ঠ/এসআর
Comments