Image description

শেরপুরে সদর উপজেলা লছমনপুর এলাকায় খাজা বদরুদ্দোজা হায়দার (রহ.) ওরফে দোজা পীরের দরবারে (মুর্শিদপুর পীরের দরবার) হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছেন। বুধবার সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। এ মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

নিহত হাফিজ মিয়া (৩৯) সদর উপজেলার কান্দা শেরীরচর গ্রামের বাসিন্দা এবং পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রীর নকশাকার। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার ভোরে (২৬ নভেম্বর) মাদ্রাসাশিক্ষক তরিকুল ইসলামসহ ৪০০-৫০০ জন মানুষ মুর্শিদপুর পীরের দরবারে হামলা চালায়। তারা দরবারের টিনের বেড়া ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় দরবারে থাকা খাদেম ও অন্য মুরিদরা তাদের বাধা দিলে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৩ জন আহত হন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‌্যাব গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে দরবার থেকে কয়েকটি পেট্রোল বোমা এবং অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় দরবার শরিফের খাদেম মাহমুদান মাসুদ বাদী হয়ে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার সুপারসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করে মঙ্গলবার রাতে সদর থানায় মামলা করেন। অপরদিকে মাদ্রাসার পক্ষ থেকেও দরবার শরিফের লোকজনকে আসামি করে আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। দরবারে হামলা-ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ আট জনকে আটক করে।

আটক আট জনের মধ্যে হাফেজ উদ্দিন ও জয়নালকে গুরুতর আহত অবস্থায় পাওয়া যায়। আটকের পর তাদের প্রথমে শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে হাফেজের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ভোরে হাফেজ উদ্দিন মারা যান।

শেরপুর সদর থানার ওসি জুবায়দুল আলম বলেন, ‘দরবারে হামলার ঘটনায় মুর্শিদপুর দরবার শরিফের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ আট জনকে গ্রেফতার করেছে। 

আহত হাফিজ মিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি জানান, ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে জেনেছি। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ কার হবে। পুলিশ পুরো ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দেখছে। পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম ও সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গতকালই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।’

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকেই মুর্শিদপুর দরবার শরীফের কার্যক্রম বন্ধের হুমকি দিয়ে আসছিলেন স্থানীয় কওমীপন্থী মাদ্রাসার শিক্ষক-ছাত্র ও তাদের অনুসারিরা। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার উভয়পক্ষের মাঝে সংঘাত হয়।

মানবকণ্ঠ/এসআর