Image description

বিশ্বব্যাপী সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫০০ কোটিরও বেশি, যা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬৫ শতাংশ। বর্তমান যুগে সোশ্যাল মিডিয়ার জনপ্রিয়তা পরিসংখ্যানের মাধ্যমে পরিমাপ করার প্রয়োজন নেই; আশপাশের পরিবেশেই তার বিস্তৃত ব্যবহার স্পষ্ট। দৈনন্দিন জীবনে ব্যক্তিগত সম্পর্ক, পেশাগত যোগাযোগ এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রমের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া হয়ে উঠেছে অপরিহার্য একটি মাধ্যম।

তবে, সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে বিস্তর আলোচনা এবং বিতর্ক শুরু হয়েছে। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, এক্স (টুইটার) এবং ইন্সটাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোতে ভুল, মিথ্যা এবং অপতথ্যের ছড়ানো একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করেছেন যে, শিশু-কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর সোশ্যাল মিডিয়ার নেতিবাচক প্রভাব মারাত্মক হতে পারে। অনলাইনে অযাচিত কিছু বিষয়, অপরিপক্ব যোগাযোগ এবং অবাঞ্ছিত প্রভাব তাদের মানসিক অবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

তবে এবার অস্ট্রেলিয়া এর একটা বিহিত করেই ছাড়বে বলে মনে হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া সরকার রীতিমতো আদাজল খেয়ে লেগেছে ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য দেশটিতে সোশ্যাল মিডিয়া নিষিদ্ধ করতে। উদ্যোগটি প্রক্রিয়াধীন ছিল এতদিন, এবার বাস্তবায়নের বেশ কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। 

বুধবার (২৭ নভেম্বর) অস্ট্রেলিয়ার সংসদের নিম্নকক্ষে শিশুদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া নিষিদ্ধ করা সম্পর্কিত একটি বিল পাস হয়েছে। যদিও গুগলের মালিক প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট ও ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা জোর চেষ্টা চালিয়েছে বিলটিকে বিলম্বিত করতে। তবে তাতে কাজ হয়নি। অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধি পরিষদে আজ (বুধবার) এই বিলটির পক্ষে ভোট পড়ে ১০২টি, বিপক্ষে ১৩টি। 

অর্থাৎ বেশ বড় ব্যবধানেই বিলটির পক্ষে রায় দিয়েছেন প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যরা। এ থেকে এটাও বোঝা যাচ্ছে যে, সরকারি-বেসরকারি দু’দলের প্রতিনিধিরাই এই বিলটির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। বিলটি আইনে পরিণত হলে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারে সবচেয়ে কঠোর নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপের একটি হতে চলেছে এটি। 

প্রতিনিধি পরিষদে পাশ হওয়ার পর বিলটি নিয়ে আজই (বুধবার) অস্ট্রেলিয়ার সিনেটে আলোচনা হওয়ার কথা। অস্ট্রেলীয় সরকার চাইছে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) বছরের সংসদীয় অধিবেশনের শেষ দিনে বিলটিকে আইনে পরিণত করতে।

আগামী মে মাসে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনকে সামনে রেখে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনী আলবানিজ চাইছেন নিজের জনপ্রিয়তার রেটিং-কে ঊর্ধ্বমুখী রাখতে। শিশুদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিষিদ্ধের বিষয়টি এক্ষেত্রে সহায়ক হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। শিশুদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার ঝুঁকিপূর্ণ বলেই আলবানিজ প্রশাসন এই কঠোর পদক্ষেপ নিতে চলেছে বলে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। 

মানবকণ্ঠ/এসআর