শেরপুর সদর উপজেলার লছমনপুরে মঙ্গলবার দোজা পিরের দরবারে হামলার ঘটনায় হাফেজ উদ্দিন নামে আহত একজনের মৃত্যুর পর দরবারে ফের ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সকাল থেকেই বিপুলসংখ্যক সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাব সদস্য মোতায়েন থাকলেও বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের বাধা উপেক্ষা করে মুর্শিদপুর পিরের দরবারে ওই ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়।
এ সময় দরবারে থাকা গরু, মহিষ, ছাগল ও দুম্বাসহ দরবারের বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যান বিক্ষুব্ধ জনতা।
জানা যায়, শেরপুর সদরের লছমনপুর গ্রামের মুর্শিদপুর খাজা বদরুদ্দোজা হায়দার ওরফে দোজা পিরের দরবার শরীফের মুরিদ ও স্থানীয় জামতলা ফারাজিয়া আল আরাবিয়া কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক এবং তৌহিদী জনতার মধ্যে বেশকিছু দিন বিরোধের জের ধরে গত ২৬ নভেম্বর দরবারে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে পার্শ্ববর্তী কান্দাশেরীরচর গ্রামের ইদু মিয়ার ছেলে হাফেজ উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। পরে আহতদের মধ্যে হাফেজ উদ্দিন ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৭ নভেম্বর সকালে মারা যান।
পরদিন বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় কুসুমহাটির জমশেদ আলী কলেজ মাঠে নিহত হাফেজ উদ্দিনের জানাজার সময় দেওয়া হয়। শেরপুরের সব মাদ্রাসা বন্ধ রেখে জানাজায় অংশ নিতে মাইকিং করা হয়।
এদিকে জানাজাকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যরা বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই মুর্শিদপুর দরবার শরীফ ও কুসুমহাটি বাজার এলাকায় শক্ত অবস্থান নেয়। তবে কুসুমহাটির জমশেদ আলী কলেজ মাঠে হাফেজ উদ্দিনের জানাজায় বক্তব্যে বক্তারা হাসপাতালে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীনদের মুক্তি এবং ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দোজা পিরকে গ্রেফতারের দাবি জানান।
একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ জনতা জানাজা ছেড়ে লাঠিসোটা নিয়ে দরবারের দিকে অগ্রসর হন। ওই সময় সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষুব্ধদের বাধা দিলেও সেটি উপেক্ষা করেই তারা পিরের দরবারে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। ওই সময় তারা দরবারের টিনের বেড়া ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। একইসঙ্গে দরবারের গরু-মহিষ, দুম্বা, ছাগল, ভেড়াসহ গবাদিপশু ও সব ধরনের মালামাল নিয়ে যায়।
মানবকণ্ঠ/আরআই
Comments